ক্ষোভ জানিয়ে বেহাল সড়কে দাঁড়িয়ে সিলেট বিএনপি সভাপতির লাইভ

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় গতকাল স্থানীয়দের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে বেহাল সড়ক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীছবি: প্রথম আলো

সিলেটের যোগাযোগব্যবস্থার দুরবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি সড়কে দাঁড়িয়ে বেহাল অবস্থা নিয়ে লাইভ করেন। দ্রুত সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও রেল যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি না হলে সিলেটবাসীকে নিয়ে তিনি ‘ব্যাপক আন্দোলন’ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।

গতকাল বুধবার বিকেল চারটার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পারাইচক এলাকায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। এ সময় তিনি পারাইচক এলাকার সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজার-জগদীশপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে দুরবস্থা নিয়ে লাইভ করেন। মুহূর্তে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী গতকাল পারাইচক এলাকায় বলেন, ‘সিলেট থেকে ঢাকায় যেতে হলে ১৬ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা, ২৪ ঘণ্টা লাগে। ভগ্ন এক দশা মহাসড়কের। আঞ্চলিক সড়কগুলোও বেহাল অবস্থায় আছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেন করার কথা বলে আজকে ছয় বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ৭ পারসেন্ট (শতাংশ)। মহাসড়কের যে দুই লেন আগে থেকে ছিল, সেটাও ভাঙাচোরা। অসহায় অবস্থায় আছে সিলেটবাসী। মহাদুর্ভোগে থাকলেও সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেই।’ তিনি রেলযোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি সিলেটের জন্য নতুন ট্রেন বরাদ্দের দাবি জানান।

আগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় যেখানে সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়া যেত, এখন সেখানে সময় লাগছে ১৬ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে ক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।
আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সভাপতি, সিলেট জেলা বিএনপি

কর্মসূচি শেষে সন্ধ্যার দিকে যোগাযোগ করলে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, যোগাযোগে দুর্ভোগের কারণে সিলেটের মানুষ এখন ক্ষুব্ধ আছেন। আগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় যেখানে সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়া যেত, এখন সেখানে সময় লাগছে ১৬ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে ক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ আট বছর ধরে চলছে। এতে সম্প্রতি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট তীব্র রূপ নিয়েছে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দেশে ফিরে যান। তিন মাস পর তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাঁদের অনেক মালামাল খোয়া যায়। এতে কাজের গতি কমে যায়।

এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ও রেলযোগাযোগের দুরবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু না হলে সিলেটবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।