আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছোট ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি শুনেছি এখানে (সদর-হোসেনপুর) কোনো উন্নতিই হয় নাই। ভাই যেসব উন্নতির চেষ্টা করেছিলেন, ভাই মারা যাওয়ার পর সব উন্নয়ন বন্ধ হয়ে গেছে। উন্নয়ন অন্য কোথায় চলে গেছে, পানির দেশে চলে গেছে।’
আজ শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সমবায় কমিউনিটি সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূরের বড় ভাই।
সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার ভাই সৈয়দ আশরাফ আমার কাছে এসে বললেন, “আমি একটা মেডিকেল কলেজ করব।” আমি জিজ্ঞেস করলাম কোথায় করবা? ভাই বলেন, “আমি যশোদল করব, জমি দিবি তুই?” আমি বলছি দেব। আজকে যেখানে মেডিকেল হাসপাতাল হয়েছে ওই জমি কিন্তু আমি দিয়েছি। ওই সময়ে ৬ কোটি ১ লাখ টাকার জমি। আজকে শুনি মেডিকেল কলেজ চলে না। মেডিকেলে ব্যবসা হয়, রোগীরা খাদ্য পায় না, এক্স-রে মেশিন নষ্ট, বিভিন্ন মেশিন নষ্ট, ওষুধ নাই, ডাক্তার নাই। রোগীরা এখানে চিকিৎসা পায় না। ময়মনসিংহ যায়, ঢাকায় যায়।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম আগামী নির্বাচনের জন্য ভোট চেয়ে বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে আমার প্রথম ও পবিত্র দায়িত্ব হবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে সাইজ করা। যদি না পারি তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই পদত্যাগ করব। কোনো রোগী আর ঢাকায় যাবে না, ময়মনসিংহে যাবে না। এখানে চিকিৎসা করবে, আমার চিকিৎসা এখানেই হবে। মরলে এখানেই মরব।’
সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘ভাই বড় শখ করে নরসুন্দা প্রকল্প করছিল। নরসুন্দা একটা আদর্শ প্রকল্প হওয়ার কথা। ভাই মারা যাওয়ার পরে সব উন্নয়ন বন্ধ। কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি। আপনারা সবাই ভোটার। আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে আপনারা এর প্রতিবাদ করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা দুঃখের কথা বলি, আমি শুনেছি কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) আসে, গম আসে, চাল আসে। নিমক হারামির দল বিক্রি করে দেয়। আল্লাহর ওয়াস্তে এগুলো বিক্রি করবেন না। একটা কাগজ (কাবিখা) বিক্রি করে ৫৫ হাজার টাকায়। আমি ব্যবসা করে মাসে রোজগার করি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। আমার চুরি করার দরকার নাই। গরিবের হক আমি মারব না। আমার নেতা চাই না, আমার ভোটার চাই।’
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিফাত উদ্দিন আহম্মেদের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান, আব্দুস ছালামসহ সদর ও হোসেনপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে অন্য বক্তারা আগামী নির্বাচনে সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলামকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সভা শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সবার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মারা গেলে তাঁর ছোট বোন চিকিৎসক সৈয়দা জাকিয়া নূরকে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই সময় সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলামও মনোনয়ন চেয়েছিলেন।