ভুল ঠিকানায় নিয়ে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৪ জনের নামে মামলা

রাতের বেলা ভুল ঠিকানায় নিয়ে বন্ধুকে বেঁধে রেখে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল শনিবার রাতে চারজনের নামে মামলা হয়েছে। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারী ও তাঁর বন্ধুকে থানায় নিয়ে আসে। পরে থানায় চারজনের নামে মামলা করেন ওই নারী।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটির বাড়ি হবিগঞ্জে। ছেলের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায়। ছেলেটি হবিগঞ্জে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। সেখানেই তাঁদের দুজনের পরিচয়। গত শুক্রবার তাঁরা বিয়ের উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জে আসেন। তাঁরা সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে না গিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার একটি গ্রামে ছেলের এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সেখানে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আবদুল করিমের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। করিম তাঁদের ওই ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অটোরিকশায় তোলেন। কিন্তু তাঁদের দেওয়া ঠিকানায় না গিয়ে অন্যখানে নিয়ে যান করিম। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, তাঁর অটোরিকশার গ্যাস শেষ হয়ে গেছে। এরপর আফসর উদ্দিনসহ দুজনকে ডেকে আনেন করিম। আফসর উদ্দিন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত নির্বাচনে তিনি ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।

আফসর উদ্দিন ওই নারী ও তাঁর বন্ধুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গ্রামের ফয়জুল বারীর বাড়িতে নিয়ে যান। ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। পরে আফসর উদ্দিন, ফয়জুল বারী, আবদুল করিম ও ছয়ফুল ইসলাম বন্ধুকে ঘরের বাইরে বেঁধে রেখে ওই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। পরে ওই নারী ও তাঁর বন্ধুকে সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের একটি স্থানে এনে নামিয়ে দেওয়া হয়। ছেলেটি তাঁর বন্ধুর কাছে খবর পাঠান। তিনি এসে ঘটনা শুনে এলাকাবাসীকে জানান।

গতকাল দুপুরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাব্বির আহমদ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত কুমার দাস পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই নারী ও তাঁর বন্ধুকে থানায় নিয়ে যায়। পরে ওই নারী চারজনের নামে মামলা করেন।

অসিত কুমার দাস বলেন, আফসর উদ্দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ওয়ার্ড কমিটির একাংশের সাধারণ সম্পাদক। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এলাকার মানুষ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি চান।

আজ রোববার সকালে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আজ জেলা সদর হাসপাতালে মেয়েটির প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে।