কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘটনা’ নিয়ে দুই তদন্ত কমিটি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনা ও শিক্ষক সমিতির দাবিদাওয়া পর্যালোচনার জন্য দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরীর সই করা পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এর মধ্যে ‘উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনা তদন্ত করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ্রকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক  মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) খালেদা আক্তার ও সদস্যসচিব কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী।

আরও পড়ুন

শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহেরকে। এই কমিটির সদস্যসচিবও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর উপাচার্যের কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কিছু দাবিদাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। এরই জেরে তিনবার ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষক সমিতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না করায় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষকেরা। গত ২৮ এপ্রিল শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপাচার্যপন্থী সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের কিল, ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে প্রশাসনিক ভবন দখলে নেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।

আরও পড়ুন

শিক্ষক সমিতির ৭ দফা দাবি হলো ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা ও ঘটনার তদন্ত করা। পাশাপাশি প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ করা। অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা; অধ্যাপক গ্রেড ১ ও ২-তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতিমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার করা; শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবহির্ভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা; ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষা ছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।