মতলবে কৃষি ব্যাংকের কার্যালয়ের ছাদে পড়ে ছিল নৈশপ্রহরীর লাশ

সাজ্জাদ হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গজরা বাজার এলাকায় কৃষি ব্যাংকের কার্যালয়ের ছাদ থেকে ওই ব্যাংকের নৈশপ্রহরীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশের ধারণা, গতকাল শনিবার রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ব্যাংকের লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিহত নৈশপ্রহরীর নাম মো. সাজ্জাদ হোসেন (১৯)। তাঁর বাড়ি উপজেলার গজরা গ্রামে। সাজ্জাদ কয়েক মাস আগে নৈশপ্রহরী হিসেবে ওই কার্যালয়ে যোগ দেন।

থানা-পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই নৈশপ্রহরী ব্যাংকের কাছাকাছি একটি কক্ষে থাকতেন। প্রতিদিনের মতো গতকালও সন্ধ্যার পর ব্যাংকের নিচতলায় তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত ১২টার পর থেকে মুঠোফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর আর কথা হয়নি। তাঁর মুঠোফোনের সংযোগটিও বন্ধ পান পরিবারের লোকজন।

সকাল সাড়ে নয়টায় ওই ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী সেখানে গিয়ে দেখেন, নৈশপ্রহরী সেখানে নেই। কলাপসিবল গেট ভাঙা। গেটের সামনে স্থাপিত ব্যাংকের সিসি ক্যামেরাগুলোও নেই। তাঁরা ব্যাংকটির কার্যালয়ের ছাদে গিয়ে দেখেন, সেখানকার একটি খুঁটিতে ওই নৈশপ্রহরীর হাত-পা বাঁধা, নিস্তেজ শরীর। গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সেখান থেকে ওই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নৈশপ্রহরীর বাবা মো. সামাদ সরকার বলেন, ‘আমার ছেলেডা বড়ই ভালা ছিল। কে, কেন তাঁকে এ্যামনে মাইরা ফালাইলো, তা বুঝতে পারতাছি না। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

কৃষি ব্যাংকের ওই শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, কারা এটি ঘটিয়েছে, তা বলতে পারছেন না। তদন্তে সবকিছু বের হয়ে আসবে। সাজ্জাদ বিনয়ী ছিলেন। এখন পর্যন্ত তাঁরা ব্যাংকে লুটপাটের কোনো আলামত পাননি।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ঘটনায়একটি হত্যা মামলার করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরও বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কী কারণে সাজ্জাদকে হত্যা করা হলো বা তাঁর সঙ্গে ব্যাংকের ভেতরের বা এলাকার কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।