টানা বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামে অফিস–আদালতে পানি ঢুকেছে, রংপুরে পাড়া–মহল্লায় হাঁটুপানি

শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পানি ঢুকেছে। আজ মঙ্গলবার সকালেছবি: প্রথম আলো

টানা বৃষ্টিতে উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রাম ও রংপুরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহর ও গ্রামের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে এবং ভেঙে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।

কুড়িগ্রামে গতকাল সোমবার রাত ৯টায় বৃষ্টি শুরু হয়। টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে গেছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জজকোর্ট, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ লাইনস, হাসপাতালপাড়া, পৌর বাজার, হাটিরপাড়, ভোকেশনাল মোড়সহ বিভিন্ন দপ্তর ও আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের রাজারহাট কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম জেলায় ১০২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। কোনো এলাকায় যদি ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়, সেটিকে হালকা বৃষ্টি বলা হয়। ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বলা হয়। আর ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটারের বৃষ্টিকে ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয় এবং বৃষ্টি ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হলে, তা অতি ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়।

টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য আহসান হাবীব ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জলজটে কুড়িগ্রাম গোটা পৌরসভা। পানিনিষ্কাশনের যুগোপযোগী ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে অফিস–আদালত, রাস্তাঘাট ও বাড়িতে জমেছে হাঁটুপানি। ডিসি অফিস, এসপি অফিস, জজকোর্ট, ফায়ার সার্ভিসে এখন থই থই পানি। সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ।’

রংপুরে পাড়া–মহল্লায় হাঁটুপানি
ছবি: প্রথম আলো

ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভেতরেও পানি ঢুকে রান্নার চুলা ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন কর্মকর্তা কবির হোসেন।

এদিকে রংপুরে গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে নগরের অন্তত ২০টি মহল্লা এক থেকে দেড় ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নগরে ১৪১ মিলিমিটার ও রাজারহাটে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।

নগরের কামারপাড়া, আদর্শপাড়া, লালবাগ, বাবু খাঁসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও রাস্তায় পানি জমে গেছে। শ্যামাসুন্দরী খালের অপর্যাপ্ত খননের কারণেই জলাবদ্ধতা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। কামারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠেও হাঁটুপানি জমেছে। শিক্ষার্থীরা এই পানি মাড়িয়ে পরীক্ষা দিতে আসছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।