প্রবাসী বাবার পাঠানো টাকায় কেনা মোটরসাইকেলেই প্রাণ গেল এইচএসসি পরীক্ষার্থীর

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত শেখ মুহাম্মদ ইমনছবি: সংগৃহীত

ছেলের আবদার মেটাতে প্রবাসী বাবা মোটরসাইকেল কেনার জন্য টাকা পাঠিয়েছিলেন ছয় মাস আগে। সেই টাকায় মোটরসাইকেল কেনাটাই কাল হলো এইচএসসি পরীক্ষার্থী শেখ মুহাম্মদ ইমনের। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ আজ বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালু মরার টেক এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

নিহত ইমন রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মগদাই গ্রামে ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী শেখ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ইমন। হাটহাজারীর কুয়াইশ শেখ শেখ মুহাম্মদ সিটি করপোরেশন ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর।

এই ঘটনায় আহত হন একই গ্রামের মুহাম্মদ মুসার ছেলে মুহাম্মদ সামির (২০)। তাঁরা দুজনেই মোটরসাইকেল আরোহী ছিলেন। সামিরকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ইমনের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাস আগে প্রবাস থেকে বাবার পাঠানো টাকায় নতুন একটি মোটরসাইকেল কেনেন ইমন। এরপর সেটি নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন আজ দুপরে। আগামী জুন মাসে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল ইমনের। পথে দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস ইমনদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেন। তাঁরা মোটরসাইকেলসহ বাসের নিচে চাপা পড়েন।

পরে স্থানীয় লোকজন দুজনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াপাড়া পথেরহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত সামিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উদয় দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘হানিফ পরিবহনের বাসটি কাপ্তাই থেকে শহরের দিকে যাচ্ছিল আর মোটরসাইকেলটি ছিল কাপ্তাইমুখী। পথে মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই এক শিক্ষার্থী মারা যান। আরেকজন হাসপাতালে পাঠাই। আমরা দুজনকেই বাসের মাঝ–বরাবর নিচ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি।’

রাউজান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাশ পরিবার হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে গেছে। আমরাও সেখান আছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছেন, তবে বাসটি জব্দ করা হয়েছে।’