শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পর পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শাবির প্রক্টরিয়াল বডি-প্রাধ্যক্ষরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেঁধে দেওয়া এক দিন সময়ের মধ্যে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রক্টরিয়াল বডি, ছয়টি আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষরা পদত্যাগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান আজ বিকেল চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হল ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। অন্যদের পদত্যাগপত্র তাঁর কাছে পৌঁছায়নি।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাবিপ্রবি শাখার সমন্বয়কেরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরসহ দপ্তরগুলোর প্রশাসকদের পদত্যাগ করার সময় বেঁধে দেন। একই সঙ্গে তাঁরা উল্লেখ করেন, ছাত্রদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সব শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলার দায় স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় তাঁদের ক্যাম্পাস থেকে চিরজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন শিক্ষার্থীরা। যাঁরা দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করবেন, তাঁদের ক্যাম্পাসে থাকার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিবেচনা করবেন।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রক্টরিয়াল বডি ও আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ-সহকারী প্রাধ্যক্ষরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগের কথা জানা যায়নি।
শিক্ষার্থীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে অবগত নন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক কবির হোসেন। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তকে তিনি প্রাধান্য দেবেন। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি জানান।
শিক্ষার্থীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ আমিনা পারভীন জানান, তাঁর পদত্যাগপত্র প্রস্তুত রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেবেন তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে একাধিকবার কল দিলেও তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পর থেকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে আসছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তারা জানান, সরকারের পতনের পর থেকেই অনেক কর্মকর্তা গা ঢাকা দিয়েছেন। অনেকেই অফিসে আসছেন না। তবে ক্যাম্পাসে বিএনপিপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সরব বিচরণ দেখা যাচ্ছে।