নাটোরে একই মাঠে বিএনপি-আ.লীগের কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা
নাটোর উপশহর মাঠে কাল শনিবার ইফতার মাহফিল ও অবস্থান কর্মসূচি করার জন্য মঞ্চ বানিয়েছিল বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই মঞ্চ ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরপরও কাল কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে দলটি। একই মাঠে কাল শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ অবস্থায় একই জায়গায় দুই দলের কর্মসূচি ঘিরে শহরজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
মঞ্চ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপশহর মাঠে অবস্থান কর্মসূচি ও ইফতার মাহফিলের জন্য মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণ করেছিল বিএনপি। শনিবার দুপুর থেকে সেখানে তাঁদের কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। পুলিশের মৌখিক অনুমতিও নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু গতকাল রাত ১০টার দিকে ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে প্রথমে মঞ্চ ভাঙচুর করে। পরে মঞ্চ ও প্যান্ডেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এ ঘটনার পরও বিএনপি কর্মসূচি বাতিল করবে না। শনিবার বিকেলে একই জায়গায় তাঁদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে গতকালের ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন বিএনপির নেতারা। তাঁদের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পনা করে বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। তাঁরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এদিকে নাটোর পৌর আওয়ামী লীগ উপশহর মাঠে শনিবার শান্তি সমাবেশ করার জন্য গতকাল থেকে মাইকিং করছে। শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ওই মাঠে দল বেঁধে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। কর্মসূচির জন্য মাঠের দক্ষিণ অংশে মঞ্চ তৈরি করছিলেন কয়েকজন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অশান্তি করার জন্য সমাবেশ করব না। আমরা পালাক্রমে শান্তি সমাবেশ করছি। এর অংশ হিসেবে উপশহর মাঠে পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শহরে মাইকিং চলছে। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হবে।’
বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি অহেতুক আমাদের বিরুদ্ধে মঞ্চ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করছে। আমাদের ধারণা, বিএনপির কর্মীরা কর্মসূচিতে লোক জড়ো করতে ব্যর্থ হবে ভেবেই নিজেরা ওই নাটক সাজিয়েছে।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পুলিশের কাছে কর্মসূচি পালনের জন্য লিখিত অনুমতি চেয়েছে। বিএনপি অনুমতি না নিয়েই অনুমতি নেওয়ার মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
বড় দুটি দলের কর্মসূচি ঘিরে শহরজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শহরে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ উপশহর এলাকা এড়িয়ে চলাফেরা করছেন। উপশহর এলাকার এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও এলাকাটি মূলত আবাসিক। হঠাৎ দুই দল পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। উপশহর এলাকার বাসিন্দা ইফতেখার ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আশা করি বড় দুই দল আমাদের শান্তি নষ্ট করবে না।’
নাটোর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ একই জায়গায় একই সময়ে দুটি দলের কর্মসূচি দেওয়ায় ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছে। পুলিশ আজ দুপুর পর্যন্ত কাউকেই কর্মসূচি পালনের লিখিত অনুমতি দেয়নি। পরিস্থিতির প্রয়োজনে যা করার পুলিশ তাই করবে।