টেকনাফে জমি নিয়ে বিরোধে হামলা, বাবার পর মারা গেলেন ছেলেও

মরদেহ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের হামলায় ছোট ভাই মোহাম্মদ হোছেন (৫২) ঘটনার দিন মারা যান। ১৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন হোছেনের ছেলে মোহাম্মদ দেলোয়ার (২১)। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম।

আরও পড়ুন

গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম–উত্তরপাড়া এলাকায় দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরা হয়। এর জের ধরে বড় ভাই মোহাম্মদ ইউনুসের (৫৮) হামলায় ওই দিনই রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ হোছেন (৫২)।

পরিবারের দাবি, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ইউনুস পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হোছেনকে খুন করেছেন। ওই সময় হোছেনের ছেলে দেলোয়ারকে কুপিয়ে আহত করা হয়। ঘটনার পর থেকে ইউনুস, তাঁর দুই ছেলে ও আরেক ভাই নূর মোহাম্মদের ছেলে ইউনুস পলাতক থাকলেও র‍্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার থেকে ইউনুসকে আটক করে।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম বলেন, পারিবারিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইউনুস ও হোছেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন ২৮ জানুযারি শনিবার বিকেলে একই বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইউনুস ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের দুই ছেলেকে নিয়ে হোছেন ও তাঁর ছেলেকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আহত বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হোছেনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দেলোয়ারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহত দেলোয়ারের মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘স্বামী হারানো ১৫ দিনের মধ্যে ছেলেকে হারাতে হয়েছে। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব। মামলার সব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমার মৃত্যুর আগেই আমি স্বামী ও ছেলের খুনিদের বিচার দেখে যেতে চাই।’

জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, ওই ঘটনার পরের দিন রোববার রাতে নিহত মোহাম্মদ হোছেনের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে ইউনুসসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনাতা আরও পাঁচ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। দেলোয়ারের লাশটি মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।