সুনামগঞ্জের পাঁচ খাল দখলমুক্ত করার নির্দেশ আদালতের

দখল–দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়া সুনামগঞ্জের কামার খাল। সম্প্রতি পৌর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জ পৌর শহর ও আশপাশের এলাকার পাঁচটি খালের দখলদারদের পূর্ণ তালিকা করে তাঁদের উচ্ছেদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে খালগুলোর সীমানা নির্ধারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে জনস্বার্থে করা একটি মামলার (মামলা নম্বর-১০৮১/২০২৩) প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন। বেলার আইনজীবী এস হাসানুল বান্না আদালতের আদেশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জ শহরের ওই খালগুলো হলো তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী ও নলুয়াখালী খাল। একসময় খালগুলোতে ব্যাপক প্রবাহ ছিল। শহরের পানিনিষ্কাশনে বিশেষ ভূমিকা রাখত খালগুলো। দখল-দূষণের কারণে খালগুলো এখন নালায় পরিণত হয়েছে। খালের ওপর গড়ে উঠেছে বসতঘর, দোকানপাট, সরকারি ও বেসরকারি বহু স্থাপনা।

আদালত নির্দেশনা বাস্তবায়ন সাপেক্ষে ছয় মাসের মধ্যে মামলার বিবাদীদের এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশের পাশাপাশি অননুমোদিত দখল থেকে পাঁচটি খাল রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন আইনবহির্ভূত ও জনস্বার্থ পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চেয়েছেন আদালত।

বেলার মামলার বিবাদীরা হলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর বিভাগ-১) নির্বাহী প্রকৌশলী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)।

আরও পড়ুন

এর আগে গত বছরের ২ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়া পাঁচটিসহ সাতটি খাল উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌরসভার মেয়রসহ ১৩ ব্যক্তিকে আইনি নোটিশ পাঠায় বেলা।

বেলার সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক আইনজীবী শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে আমরা এসব খাল উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করেছি, দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’