বাবাকে পিটিয়ে হত্যার ২৭ বছর পরে ছেলেকেও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

হত্যাপ্রতীকী ছবি

যশোরের শার্শা উপজেলার কন্যাদাহ গ্রামের আবদুল আজিজ গাইনকে পিটিয়ে হত্যার প্রায় ২৭ বছর পর তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলামকেও একইভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পিটুনিতে আহত সাইফুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। একই পরিবারের লোকজন দুটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন।

নিহত সাইফুল ইসলাম (৪০) শার্শা উপজেলার কন্যাদাহ গ্রামের কৃষক। তাঁকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত সাইফুলের ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম (৩৫) আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত সাইফুলের মা ছায়রা বেগম বাদী হয়ে শার্শা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার মূল আসামি শার্শা উপজেলার উলাসী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাসানুজ্জামানসহ (৩৫) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

স্বজনেরা অভিযোগ করেন, উলাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইনাল হোসেনের ভাই আইয়ুব হোসেন ১৯৯৭ সালে খুন হন। ওই ঘটনায় কন্যাদাহ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আজিজ গাইনকে কলারোয়া থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখন আইনাল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও পরে রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা হয়। ওই ঘটনার ২৭ বছর পর আইনাল হোসেনের ভাতিজা হাসানুজ্জামান একই গ্রামের আজিজের ছেলে সাইফুলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শরিফুলেদের স্বজন নয়ন হোসেন (১৯) ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান পরিবারের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ নিয়ে হাসানুজ্জামান সালিসও বসান। সেখানে ডাকা হলে নয়ন হাজির না হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় গত বুধবার হাসানুজ্জামান তাঁর সহযোগীদের নিয়ে নয়নের মামা শরিফুল ইসলামকে ধরে নিজের গরুর খামারে নিয়ে আটকে রাখেন। এ সময় তাঁকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। খবর পেয়ে শরিফুলের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম তাঁকে উদ্ধার করতে ওই গরুর খামারে যান। সেখানে হাসানুজ্জামান বিদেশি টর্চলাইট দিয়ে সাইফুলের মাথায় আঘাত করেন। হাসানুজ্জামানের সহযোগীরাও তাঁকে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেন। এতে সাইফুল অচেতন হয়ে পড়েন। শরিফুল চিৎকার দিলে তাঁরা পালিয়ে যান। আশপাশের লোকজন আহত অবস্থায় দুই ভাইকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সাইফুল মারা যান।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, মেয়েলি একটা ঘটনায় ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামানসহ কয়েকজন মিলে সাইফুল ও শরিফুলকে পিটিয়ে জখম করেন। এর মধ্যে সাইফুল নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার মূল আসামি হাসানুজ্জামানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।