সার্জেন্টকে আহত করে পালানো মোটরসাইকেলচালক যেভাবে পুলিশের জালে

ট্রাফিক সার্জেন্টকে আহত করে পালানোর পর ওই মোটরসাইকেলচালককে বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। রোববার দুপুরে
ছবি: সংগৃহীত

হেলমেট না থাকায় এক মোটরসাইকেলচালককে থামান ট্রাফিক সার্জেন্ট। মোটরসাইকেলটি থামলে কাগজপত্র চাওয়ার পাশাপাশি হেলমেট না পরার কারণ জানতে চান। তখন চালক মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যেতে থাকেন। সার্জেন্ট হ্যান্ডেলে হাত দিয়ে তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু হ্যাঁচকা টান দিয়ে সার্জেন্টকে প্রায় ৪০ ফুট দূরে নিয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে পা দিয়ে সার্জেন্টকে ছাড়িয়ে চালক পালিয়ে যান।

আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে রাজশাহীর এয়ারপোর্ট থানার বায়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে দুপুরের দিকে ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক ব্যক্তির নাম রেজাউল হোসেন ওরফে তারেক (৩০)। তিনি রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভুগরইলের শিহাবের মোড় এলাকার মিনারুল ইসলামের ছেলে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট ফিরোজ হোসাইন। তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশে (আরএমপি) কর্মরত। মোটরসাইকেলে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ায় তিনি বাঁ হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন। সড়কের সঙ্গে ঘষা লেগে তাঁর পোশাকও ছিঁড়ে গেছে। তাঁকে প্রথমে পুলিশ হাসপাতালে, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিকেলে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে আহত করার অভিযোগে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেছেন ওই সার্জেন্ট।

আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট ফিরোজ হোসাইন
ছবি: সংগৃহীত

ঘটনার পর ওই মোটরসাইকেলচালকের কোথাও কোনো সন্ধান পাচ্ছিল না পুলিশ। পরে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা ইফতারির প্যাকেটের সূত্র ধরে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁকে আটকে নেতৃত্ব দেন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক। থানার এসআই শরিফুল ইসলামসহ পাশের শাহ মখদুম থানা-পুলিশও এতে সহযোগিতা করে।

পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, রেজাউল সকালে বায়া থেকে আমচত্বরের দিকে যাচ্ছিলেন। সার্জেন্ট মাথায় হেলমেট না থাকায় তাঁকে থামান। এরপর সার্জেন্ট হ্যান্ডেলে হাত রেখে কাগজপত্র চাচ্ছিলেন। তখনই হ্যাঁচকা টান দিয়ে তিনি পালাতে শুরু করেন। প্রায় ৪০ ফিট হিঁচড়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর সার্জেন্টের বডি-ওন ক্যামেরা ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে রেজাউলের ছবি সংগ্রহ করা হয়।

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, রেজাউলকে কেউ চিনছিলেন না। পরে মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা ইফতারির খালি প্যাকেটের দোকানে যায় পুলিশ। জানা যায়, বাড়িতে অনুষ্ঠানের জন্য বায়া এলাকা থেকে তিনি ওই খালি প্যাকেট কেনেন। অন্যদিকে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে জানা যায়, ভুগরইল শিহাবের মোড়ে এক তরুণ নীল রঙের এমন একটি মোটরসাইকেল চালান। এরপর বাড়িতে গিয়ে রেজাউলকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, রেজাউলের চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তাঁকে কাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।