নাটোরে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি বন্ধ, আকৃতিভেদে দাম ২০০ থেকে ৪০০

নাটোর শহরের ফলের দোকানগুলোয় আজ রোববার সকালে প্রতিটি তরমুজ ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছেছবি: প্রথম আলো

নাটোর শহরের বাজারগুলোয় কেজি দরে তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর ফলে আজ রোববার সকাল থেকে সেখানে আকৃতিভেদে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। এক মাস ধরে সেখানে প্রতি কেজি তরমুজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাটোর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভোক্তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর রমজানের মাঝামাঝি নাটোরের ফল ব্যবসায়ীদের কেজি দরে তরমুজ বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁরা আকৃতিভেদে তরমুজ বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এবার তাঁরা আগের মতোই কেজি দরে তরমুজ বিক্রি শুরু করেন। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করছিলেন ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে, যা অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।

কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, জমি থেকে আকৃতিভেদে তরমুজ কিনে এনে বাজারে কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে তরমজুরের দাম বেড়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে শহরের ফলের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ফলের দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় নিচাবাজারের এক ফল বিক্রেতাকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ফল বিক্রেতাদের আজ সকাল থেকে আকৃতিভেদে তরমুজ বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ সকাল থেকে বিক্রেতারা ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতিটি তরমুজ বিক্রি করছেন।

শহরের মাদ্রাসা মোড়ে তরমুজ কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা প্রথম আলোকে বলেন, আকৃতিভেদে বিক্রি করায় ওজনে কারচুপির ঘটনা নেই, এটি সত্য; তবে বিক্রেতারা দাম আগের চেয়ে কম নিচ্ছেন না। বিক্রেতারা অনুমান করে যে দাম ধরছেন, তা কখনো কখনো আগের দামকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে প্রকৃত সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

আড়ত থেকে যেভাবে তরমুজ কেনেন, সেভাবেই বিক্রি করেন বলে দাবি নিচাবাজারের ফল বিক্রেতা মমতাজ উদ্দিনের। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের নির্দেশে আড়তদাররা আজ সকাল থেকে পিস হিসেবে বিক্রি শুরু করেছে। আমরাও পিস হিসেবে খুচরা বিক্রি করছি। তবে দাম নিয়ে ক্রেতারা অস্বস্তি বোধ করছেন। কিন্তু আমরা পাইকারিতে কমে না কিনতে পারলে কম দামে বিক্রি করব কীভাবে?’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাটোর কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, কৃষক পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে তাঁরা আকৃতিভেদে প্রতিটি হিসেবে পাইকারদের কাছে তরমুজ বিক্রি করেন। অথচ পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা ভোক্তাদের কাছে কেজি দরে বিক্রি করছিলেন। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছিল। এখন আকৃতিভেদে বিক্রি করলে দাম যাচাই করা যাবে। কেউ বেশি দামে বিক্রি করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য উৎপাদন পর্যায়ে দামের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলে জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের এই সহকারী পরিচালক।