ইন্দুরকানিতে মাতৃত্বকালীন ভাতার প্রত্যয়নপত্রের জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগ

অন্তঃসত্ত্বা নারী
প্রতীকী ছবি

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করার জন্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে ২০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে কোনো টাকা লাগে না। এ ছাড়া কয়েক আবেদনকারীর কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনের বিপরীতে অতিরিক্ত ফি নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির আওতায় মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা নারীরা আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন ও পৌর ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে নির্ধারিত ৪০ টাকা ফি দিয়ে করতে পারবেন। তবে উপজেলা ‘তথ্য আপার’ কাছে গেলে বিনা মূল্যে আবেদন করা যাবে। আবেদনকারীকে চার থেকে ছয় মাসের গর্ভাবস্থায় থাকতে হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক আবেদনকারীকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র থেকে বিনা মূল্যে প্রত্যয়নপত্র ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর থেকে শিশুর জন্মপূর্ব সেবার (অ্যান্টিনেটাল কেয়ার) কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এর সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার ছিল আবেদনের শেষ সময়। আবেদন করা নারীদের মধ্য থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩০ জন ভাতার জন্য নির্বাচিত হবেন। তাঁরা প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে তিন বছর মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া ও চণ্ডীপুর ইউনিয়নের ১২০ জন গর্ভবতী নারী মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করেন। তবে এই নারীদের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে ২০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আবার কয়েক নারীর কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনের ফি ৪০ টাকার বিপরীতে ২০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া অ্যান্টিনেটাল কেয়ার কার্ডের জন্য ১০০ টাকা করে দিতে হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেন, ‘অ্যান্টিনেটাল কেয়ার কার্ড যাঁদের ছিল, তাঁদের কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু আমার কার্ড ছিল না। তাই ভাতার আবেদনের জন্য ১০০ টাকা দিয়ে কার্ড করতে হয়েছে।’

উপজেলার দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রামের এক নারীর স্বামী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদনের জন্য ২০০ টাকা ও প্রত্যয়নপত্রের জন্য ২০০ টাকা দিতে হয়েছে।’

জানতে চাইলে উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিন বলেন, নির্ধারিত ফির চেয়ে কিছু বেশি টাকা নেওয়া হয়। তবে সেটা জোর করে নেওয়া হয়নি।

তবে বালিপাড়া ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মিরাজুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেউ ৪০ টাকার আবেদন করতে এসে ৫০ টাকা দেন। আবার কেউ টাকা না দিয়েও চলে যান।
ওই দুটি ইউনিয়নের নারীদের প্রত্যয়নপত্র নিতে হয় বালিপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র থেকে। ওই কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিলীপ কুমার ভক্ত বলেন, প্রত্যয়নপত্রের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগটি সঠিক নয়।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সোহাগ হোসেন বলেন, ‘আমাদের সব সেবা বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। এসব সেবার বিপরীতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’