তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজন গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারপ্রতীকী ছবি

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২ জুলাই ঢাকার সাভার থেকে একজনকে ও গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ থেকে অন্যজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার আমতলী এলাকার মো. ফয়সাল (৩৩) ও গাইবান্ধার কলেজপাড়া এলাকার শামীম মাহফুজ (৪৮)। ফয়সালকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। শামীম মাহফুজকে সোমবার নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১।

এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়, এটিইউ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, সন্ত্রাসী সংগঠন টিটিপির মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কিছু বাংলাদেশি যুবক আফগানিস্তানে গিয়ে পাকিস্তানে ইসলামি শরিয়াহ্‌ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত। পরে এসব তথ্য যাচাই শেষে এটিইউ ২ জুলাই সাভারের দরিয়ারপুর এলাকায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড়ের কাজী অফিস–সংলগ্ন দোকান থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা মোতাবেক ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, ৫ জুলাই ফয়সালসহ ছয়জনের নাম উল্লেখসহ তাঁদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সাভার মডেল থানায় মামলা করা হয়। টিটিপির হয়ে অন্য রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্নিত ও অস্থিতিশীল করে অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, উগ্রবাদী কনটেন্ট আদান–প্রদানের অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের ইন্টেলিজেন্স শাখার এক কর্মকর্তা এ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল জানান, তিনি টিটিপির মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর সহযোগী আহমেদ জুবায়ের ওরফে যুবরাজসহ (২৩) ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকা ত্যাগ করেন। ২৯ অক্টোবর তাঁরা সৌদি আরব হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছান। সেখান থেকে তাঁরা ৬ নভেম্বর তুরখাম স্থলসীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেন। ফয়সাল ১০ নভেম্বর আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে আসেন। পরে তিনি দুবাই হয়ে ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশে ফেরত আসেন। তাঁর সঙ্গী জুবায়ের পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানে মারা যান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল আরও জানান, আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার নামের এক ব্যক্তি কয়েকজন বাংলাদেশি যুবককে টিটিপির হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ ও সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেন। তিনি বর্তমানে টিটিপির হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ইমরান নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন।

পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, টিটিপির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. ফয়সাল ও শামীম মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২ জুলাই সাভার থেকে ফয়সালকে গ্রেপ্তারের পরদিন তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ৫ জুলাই নিয়মিত মামলা করা হয়। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে শামীম মাহফুজকে আটকের পর ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তিনি এখন তাঁদের কাছে আছেন।