সাত বছর আগে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু বিকল্প না থাকায় নড়বড়ে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও লোকজন যাতায়াত করছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সেতুটির অবস্থান রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের নটাভাঙা গ্রামে খালের ওপর। এটি স্থানীয়ভাবে নটাভাঙা সেতু নামে পরিচিত। খালটি গড়াই নদের সলুয়া গ্রাম থেকে উৎপত্তি হয়েছে। শেষ হয়েছে সিরাজপুরের হাওরের দীঘলহাট এলাকায়। খালের দৈর্ঘ্য প্রায় সাত কিলোমিটার। ১৯৮৪ সালে নির্মাণ করা সেতুটি দৈর্ঘ্যে ৬০ ও প্রস্থে ১০ ফুট। সেতুটিতে একাধিকবার ছোটখাটো সংস্কার করা হয়েছে। ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সাত বছর আগে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এলজিইডি। কিন্তু আশপাশে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতায়াত করছে।
খালের দক্ষিণপাড়ে রয়েছে সলুয়া, শান্তিখোলা ও নটাভাঙা গ্রাম। উত্তরপাড়ে রয়েছে কসবামাজাইল, দীঘলহাট, সুবর্ণখোলা, কেওয়াগ্রাম, ডেমনামারা, বাগলি ও বিত্তিডাঙা গ্রাম। এই ১০ গ্রাম ছাড়া আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই সেতু ব্যবহার করে। সেতুটি সরু ও নড়বড়ে হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এতে স্থানীয় ফসলাদিসহ বিভিন্ন পণ্য হাটবাজারে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
নটাভাঙা গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, এই এলাকা পেঁয়াজ, রসুন, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের জন্য বিখ্যাত। স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে এসব পণ্য বিক্রি করার জন্য কৃষকেরা নিয়ে যান। কিন্তু সেতু বেহাল হওয়ায় প্রায়ই দুর্ভোগে পড়তে হয়। সরু সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। সেতুর দুই পাশের রাস্তা বেশ নিচু।
একই গ্রামের বাসিন্দা চিকিৎসক শাহরিয়ার খান বলেন, সেতুর দুপাশে পাকা রাস্তা। এটি পাংশা উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান রাস্তা। কিন্তু সেতুর অবস্থা ভালো নয়। সেতুর ওপর দিয়ে কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এই সেতু ব্যবহার করে খেয়াঘাট পার হয়ে পাশের জেলায় সহজেই যাতায়াত করা যায়। গড়াই নদীর তীর সংরক্ষণকাজ হচ্ছে। সব মিলিয়ে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করা প্রয়োজন।
কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কারণে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেতু পার হওয়া যায় না। অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। তা ছাড়া সেতু সরু হওয়ায় বড় যানবাহন চলতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। সবাই আশ্বাস দেন, কিন্তু এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, ‘সেতুটির নাজুক অবস্থার কথা জানি। সেতুটি বড় করা প্রয়োজন। নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন। ১৮ ফুট চওড়া ও অন্তত ৬০ ফুট লম্বা সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ পেলে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’