শিশু গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার

শিশু হত্যা
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর সদরে এক শিশু গৃহকর্মীকে শ্বাস রোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা ওই শিশুকে (১২) মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গতকাল রাতে নিহত শিশুর বাবার করা মামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পালং মডেল থানার পুলিশ।

নিহত শিশু শরীয়তপুর পৌরসভার একটি এলাকার বাসিন্দা। গত জানুয়ারি থেকে সদরের চরপাতানিধি এলাকার এক প্রবাসীর বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছিল সে। গ্রেপ্তার কিশোর ওই প্রবাসীর ছেলে।

গতকাল বিকেলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসকদের দলে থাকা এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটির শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে তার মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধের কারণে। মেয়েটি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। কখন এটা ঘটেছিল, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মামলার এজাহার, ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই প্রবাসীর স্ত্রী তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলে ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন। গত মঙ্গলবার তাঁর ব্যাগ থেকে ৭০০ টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ তুলে রাতে শিশু গৃহকর্মীকে মারধর করে ওই কিশোর। একপর্যায়ে গতকাল সকালে তাকে গলা টিপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই নারী শিশুটিকে শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন চিকিৎসক মেয়েটি মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাটি হাসপাতাল থেকে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ওই নারী ও তার কিশোর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পেটের ব্যথায় মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে মারা গেছে এমন গল্প ফেঁদেছিলেন গৃহকর্তী। সন্দেহ হলে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে শ্বাস রোধ করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। গৃহকর্তীর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় রাত ১০টার দিকে ওই শিশুর বাবা পালং মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ওই কিশোরকে আসামি করা হয়েছে। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মেয়েটির বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী তাঁর পূর্বপরিচিত। তার শিশুসন্তানকে দেখাশোনা করার জন্য মেয়েকে সে কাজে নেয়। গতকাল সকালে তাকে জানানো হয় তাঁর মেয়ে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ পরে আছে। কেন তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলা হলো বুঝতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পেটের অভাবে মেয়েটিকে কাজে দিয়ে ছিলাম। এভাবে মেয়েকে হত্যা করা হবে ভাবতে পারিনি।’