কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল পুনঃখননের কাজ করবে সেনাবাহিনী: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
অন্তর্বর্তী সরকারের পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শুভাঢ্যা খালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এর সঙ্গে দুটি বড় নদী বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরীর সংযোগ রয়েছে। ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুভাঢ্যা খালটি পুনঃখননের কাজ করা হবে। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খালটি খননের কাজটি সম্পাদন করা হবে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘কেরানীগঞ্জবাসীর কাছে একটি বার্তা হচ্ছে, সরকার যখন জনগণের টাকায় খালটি খনন করে দেবে, তখন বর্তমানে খালটিকে যেভাবে নোংরা করা হয়েছে, সেভাবে যেন আবার নোংরা করা না হয়। আজ খালের ওপর শুধু প্লাস্টিক ও ময়লা–আবর্জনা দেখে এলাম। আমাদের খালটির প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে। খালটি খননের পর দেখাশোনা করার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক ও মহল্লাভিত্তিক মনিটরিং মেকানিজম গড়ে তোলা হবে। সরকার তখনই আপনার জন্য কাজ করবে, যখন আপনি নিজে সজাগ থাকবেন। সরকার যতই কাজ করে দিক না কেন, সব গার্মেন্টসের মালিক যদি মনে করেন যে তাঁরা তাঁদের সব ঝুট-কাপড় এখানে ফেলবেন, পৌরসভা যদি মনে করে যে তার যত বর্জ্য আছে এখানে ফেলবে, তাহলে আর শতকোটি টাকার প্রকল্প দিয়েও কোনো কাজ হবে না।’
আজ সোমবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চিতাখোলা শ্মশানঘাট এলাকায় শুভাঢ্যা খাল পরিদর্শনে এসে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজ এখানে পরিদর্শনে আসার কারণ হলো, এ খালটি পুনঃখননের জন্য যে প্রকল্প পাস করা হয়েছে, সে প্রকল্প কতটুকু যৌক্তিক, এটা দেখতে আসা। এটার যে ব্যয় ধরা হয়েছে, সেটা কতটুকু যৌক্তিক, এটা দেখতে আসা। এখানে শুধু খাল খনন করলে হবে না, এখানে খাল বাঁধাই ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ও রয়েছে। এ ছাড়া খালের পাশে হাঁটার জায়গা করে না দিলে আবারও দখল হয়ে যাবে। এখানে এসে শুনলাম, খালের মাটি কাটা হচ্ছে সিটি জরিপ অনুযায়ী। কিন্তু প্রকল্পে আসলে রয়েছে সিএস জরিপ অনুযায়ী। সিএস জরিপ অনুযায়ী খালটি আরও প্রশস্ত। এখান থেকে যাওয়ার পর এ প্রকল্পের যে চূড়ান্ত চিঠি ইস্যু করা প্রয়োজন, সেটি করে দেব। এ খালটিতে পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা একটি চ্যালেঞ্জের কাজ। প্রকল্পটি আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। তখন খালের অবয়বটি অন্তত দেখা যাবে।’
সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই খালের পানিপ্রবাহের মুখগুলো বর্তমানে দখল ও ময়লা-আবর্জনার কারণে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পরিবেশদূষণের পাশাপাশি জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হচ্ছে। খালটি খনন করা হলে সমস্যাটি থাকবে না। ঢাকা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য ইতিমধ্যে বলা হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় কমানোর জন্য কিছু সেতুর পরিবর্তে নতুন সেতু করার কথা ছিল। তবে ব্যয় কমানোর জন্য সেগুলো আপাতত বাদ রাখা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম, পাউবো ঢাকা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রাফিউজ সাজ্জাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত প্রমুখ।