দুই দিন ধরে বন্ধ সরাসরি বাস চলাচল, দুর্ভোগ 

দুই জেলার পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা বসে গত বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁরা নিজ নিজ জেলার সীমানা পর্যন্ত বাস চালাবেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।

বাস
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুর থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত সরাসরি বাস চলাচল গতকাল বৃহস্পতিবারও শুরু হয়নি। এতে দুই দিন ধরে এই দুই জেলার হাজারো বাসিন্দা ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

পুলিশ প্রশাসন বলছে, সমস্যা দুই জেলার বাস মালিক ও শ্রমিক সমিতির মধ্যে। তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে নিতে বলা হয়েছে।

তবে ফরিদপুর বাস মালিক সমিতির এক নেতা বলছেন, তাঁদের কিংবা রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়ার চেয়ে প্রশাসন উদ্যোগ নিলে সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব।

দুই জেলার বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর শহর থেকে প্রতিদিন সকাল ছয়টায় রাজবাড়ী এবং একই সময়ে রাজবাড়ী থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। প্রতি ১০ মিনিট পর দুই জেলা থেকে একটি করে বাস ছেড়ে যায়। রাত আটটা পর্যন্ত এভাবে বাস চলাচল করে থাকে। কিন্তু এখন সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ। এখন রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পর্যন্ত আধা ঘণ্টা পরপর বাস চলাচল করলেও রাজবাড়ী থেকে বাস ছাড়ছে না।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের বাসশ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ফরিদপুরের রাজবাড়ীর রাস্তা মোড় থেকে রাজবাড়ীর মালিকদের বাসগুলো রাজবাড়ীর দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরপরই রাজবাড়ী থেকে ফরিদপুরের মালিকানাধীন বাসগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

ফরিদপুরের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর বলেন, দুই জেলার পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা বসে গত বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তাঁরা নিজ নিজ জেলার সীমানা পর্যন্ত বাস চালাবেন। তবে রাজবাড়ী এ সিদ্ধান্ত মেনে ফরিদপুরের সীমান্ত পর্যন্ত বাস চলাচল গতকাল শুরু করলেও ফরিদপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছিল দুই জেলার বাসগুলো নিজ নিজ জেলার সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত যাবে। কিন্তু পরে চিন্তা করে দেখা যায়, এতে যাত্রী কম হবে, তেল খরচ উঠবে না এবং যাত্রীদের ভোগান্তি হবে। এ বিবেচনা করে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

 ফরিদপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ার দিক থেকে আসা বাসগুলো ফরিদপুরের সীমানার সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত যেতে পারছে। ফলে রাজবাড়ী থেকে আসা ফরিদপুরের ওই যাত্রীরা হেঁটে কিছুটা পথ অতিক্রম করে ফরিদপুরের সীমানায় এসে মাহেন্দ্র কিংবা ইজিবাইকে ফরিদপুরে আসছেন।

রাজবাড়ী থেকে ফরিদপুর শহরে আসা যাত্রী নিয়ামুল বাসার বলেন, রাজবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পথ তিনি বাসে এসেছেন। পরে মাহিন্দ্রায় করে ফরিদপুরে আসায় তাঁকে ২০ টাকা বেশি খরচ করতে হয়েছে।

রাজবাড়ী বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বুধবার বিকেলে দুই জেলার সীমানা পর্যন্ত বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমরা বাস ছাড়ছি। তবে যাত্রী কম থাকায় ধীরে ধীরে বাস চলছে।’