ফরিদপুরে ফরহাদ প্রামাণিক (২০) নামের এক চালককে হত্যা করে তাঁর ব্যাটারিচালিত রিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নিজ নিজ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মাদকের টাকা জোগাড় করতে ফরহাদকে হত্যা করে তাঁর রিকশাটি ছিনতাই করা হয়েছিল।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আবদুল জলিল। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তির মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের মো. সুমন শেখ (২১)। গ্রেপ্তার অপরজন ফরিদপুর সদরের ঈশানগোপালপুরের সাইজুদ্দিন মাতুব্বরপাড়া গ্রামের মো. রেজাউল করিম (৪২)। তিনি ভাঙারি হিসেবে রিকশাটি কিনেছিলেন।
ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. আবদুল জলিল বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরহাদের ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠেন মো. সুমন শেখসহ আরও দুজন। তবে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় তাঁদের নাম–পরিচয় জানানো যাচ্ছে না। তাঁরা সবাই মাদকসেবী। মূলত মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করতে তাঁরা রিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনায় ফরহাদের রিকশায় যাত্রী বেশে ওঠেন তাঁরা। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টার কোনো এক সময়ে তাঁকে প্লাস্টিকের রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর ফরহাদের রিকশাটি ভাঙারি হিসেবে ফরিদপুর সদরের ঈশানগোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো. রেজাউল করিমের দোকানে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। রেজাউলের দোকান থেকে রিকশার ভাঙারি যন্ত্রাংশ ও চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শক্তিপদ মৃধা বলেন, সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দক করা হয়। ওই দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আলাদা দিন ধার্য করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আদালতের নির্দেশে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুর সদরের দুর্গাপুর গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে কলাবাগান থেকে ফরহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি রাজবাড়ী সদরের পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রামের বাসিন্দা সাত্তার প্রামাণিকের ছেলে। এক বছর আগে ফরহাদ বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা।