ছোট বোনকে বাঁচাতে পানিতে নামল বড় বোন, ডুবে মারা গেল দুজনই

পানিতে ডুবে মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

তিন বছর বয়সী হামিদা বাড়ির উঠানে খেলছিল। ঘরের বারান্দায় বসে তাকে দেখে দেখে রাখছিল আরেক বোন হাসিবা (৬)। খেলতে খেলতে উঠানের পাশের একটি ডোবায় পড়ে যায় হামিদা। তা দেখে তাকে বাঁচাতে পানিতে নামে হাসিবা। কিন্তু হাসিবাও সাঁতার জানত না। একপর্যায়ে দুজনেই পানিতে ডুবে মারা যায়।

আজ মঙ্গলবার শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নলমুরি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শিশু দুটি গ্রামের বারেক চৌধুরী ও সাবিকুন্নাহার দম্পতির।

গ্রামবাসী জানান, পাঁচকাঠি গ্রামের বারেক চৌধুরী নির্মাণশ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর তিন সন্তান। আজ সকালে সাবিকুন্নাহার রান্নাঘরে ব্যস্ত ছিলেন। ওই সময় মেয়ে হামিদা ও হাসিবা একসঙ্গে খেলছিল। খেলা করতে করতে হামিদা উঠানের পাশে ডোবায় পড়ে যায়। ওই ঘটনা দেখে তার বড় বোন হাসিবা তাকে উদ্ধারের জন্য ডোবায় নামে। সাঁতার না জানায় সেও ছোট বোনের সঙ্গে তলিয়ে যায়।

কিছুক্ষণ পর মা সাবিকুন্নাহার তাদের খুঁজতে গিয়ে দেখেন, দুই মেয়ে ডোবার পানিতে ভাসছে। তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে দুই বোনকে ডোবার পানি থেকে উদ্ধার করেন। তাদের গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নলমুরি ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনির হোসেন বলেন, গ্রামের দুজন শিশু এভাবে মারা যাওয়ায় এলাকার মানুষ শোকাহত।

বাবা বারেক চৌধুরী বলেন, ‘আমার বড় মেয়ের ছয় বছর বয়স। সে সাঁতার জানে না। তারপরও ছোট বোনকে বাঁচাতে পানিতে নেমেছিল। আমাদের সঙ্গে কেন এমন হলো?’

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম সিকদার মুঠোফোনে বলেন, বাড়ির পাশের একটি ডোবার পানিতে ডুবে দুই বোন মারা গেছে। ঘটনাটি মর্মান্তিক। আজ বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করেছেন স্বজনেরা।