জামালপুরে যমুনায় নিখোঁজ সেই আপন পেল জিপিএ-৫

নিখোঁজ আপন
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় যমুনা নদীতে নৌকায় সেলফি তুলতে গিয়ে নিখোঁজ মো. আপন (১৬) এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত এক মাসেও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। জামালপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হালিমা খাতুন তার জিপিএ-৫ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আপন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী এলাকার মহিউদ্দিন হিরুর ছেলে। সে জামালপুর জিলা স্কুল থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। ২৪ জুন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে দুই বন্ধুর সঙ্গে যমুনা নদী দেখতে বাহাদুরাবাদ নৌকাঘাটে যায়। সেখানে থাকা একটি নৌকায় উঠে কিনারায় দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার সময় হঠাৎ পানিতে পড়ে যায় আপন। এর পর থেকে সে নিখোঁজ।

আরও পড়ুন

আপনের বাবা মহিউদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটি ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। মেধা দিয়ে সে জিলা স্কুলে পড়ার সুযোগে পেয়েছিল। আমি নিজে তার লেখাপড়ার তদারকি করতাম। তাই কষ্টও অনেক বেশি। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে সে বলেছিল, “বাবা, আমি ভালো রেজাল্ট করব।” সত্যিই সে ভালো রেজাল্ট করেছে। কিন্তু আজ সে আমাদের মাঝে নেই। তার জন্য পরিবারের সবাই প্রায় পাগল হয়ে গেছি। রেজাল্ট শোনার পর তার মা-ও কান্নাকাটি করছে।’

তিনি বলেন, ছেলের লাশটিও তাঁরা খুঁজে পাননি। এখনো তার প্রতীক্ষায় আছেন। নদীর পানিতে কত-না খুঁজেছেন। কিন্তু পাননি। কোনো পরিবারের যাতে এমন পরিণতি না হয়।

জামালপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হালিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আপন এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে ছাত্র হিসেবে খুবই ভালো ছিল। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে ব্যক্তিগতভাবে তিনি চিনতেন। ফলাফল পাওয়ার পর কষ্ট লেগেছে। ছেলেটি জিপিএ-৫ পেল। কিন্তু সে পৃথিবীতে নেই। সবচেয়ে বড় কষ্ট, তার লাশটিও এখনো পাওয়া যায়নি। পরিবারের কেউ ফল জানতে আসেনি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার ফল দেখেছেন।

আপন নিখোঁজের পর ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ডুবুরি দল তাকে উদ্ধারে অভিযান চালায়। টানা কয়েক দিন অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান মেলেনি। পরে ফায়ার সার্ভিস অভিযান স্থগিত করে। এখনো সে নিখোঁজ আছে।