২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

জয়পুরহাটে ২৩ বছর পর নিজেকে বৈধ সুপার দাবি এক শিক্ষকের

সংবাদ সম্মেলন করেন মো. মাসুদ মোস্তফা। আজ মঙ্গলবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার ২৩ বছর পর নিজেকে জয়পুরহাটের কেন্দুল সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার বৈধ সুপার হিসেবে দাবি করেছেন মো. মাসুদ মোস্তফা। তিনি সুপারের পদ দখলকারী আয়েজ উদ্দীন ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন। জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মো. মাসুদ মোস্তফা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

মো. মাসুদ মোস্তফা নিজেকে একজন মজলুম শিক্ষক হিসেবে দাবি করে বলেন, তিনি ১৯৯২ সালের ২৭ জুন কেন্দুল সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার পদে যোগদান করেছিলেন। তখন থেকেই এই পদের প্রতি দৃষ্টি পড়ে সহসুপার আয়েজ উদ্দিনের। তিনি মাদ্রাসার কয়েকজন বিপথগামী শিক্ষক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীকে দিয়ে তাঁকে চাকরিচ্যুত করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ১৯৯৯ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন থানা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ৭২৩ নম্বর স্মারকে কোনো প্রকার তদন্ত ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই সাত দফা ভিত্তিহীন অভিযোগে তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সহসুপারিনটেনডেন্ট আয়েজ উদ্দিনকে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করা হয়। আয়েজ উদ্দিন স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট বনে যান।

মাসুদ মোস্তফা আরও বলেন, তিনি কথিত সাময়িক বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে ২০০০ সালে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তাঁর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। কিন্তু মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ মাদ্রাসার নামে ব্যাংকে ২০ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত ভাঙানো হয়। সুদসহ ২৫ হাজার ৮৩০ টাকার নতুন করে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) খোলা হয়। এই টাকা আত্মসাৎ দেখিয়ে মাদ্রাসার অফিস সহকারী মুর্তজা আলীকে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করানো হয়। এ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০১ সালের ১২ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে নেওয়া হয়। ওই বছরের ১৫ এপ্রিল অ্যাডহক কমিটি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর ২০০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে পদত্যাগ দেখানো হয়। ২০০১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁর পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করেননি। এর পর থেকে তাঁকে মাদ্রাসায় যেতে দেওয়া হয়নি।

মো. মাসুদ মোস্তফা বলেন, ‘আমি কয়েকবার নিজের দায়িত্ব পালন করতে মাদ্রাসায় গিয়েছি। আমার ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণভয়ে আর মাদ্রাসায় যেতে পারিনি। আমি এখনো মাদ্রাসার বৈধ সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করতে চাই। চাকরি ফিরে পেতে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

যোগাযোগ করা হলে কেন্দুল দাখিল মাদ্রাসার সুপার আয়েজ উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মো. মাসুদ মোস্তফা দেওয়ান ২৩ বছর আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এরপর আমি ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম। আমি ২০০৫ সালে সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। মাসুদ মোস্তফার দাবি সঠিক নয়।’