দোকান থেকে ডেকে নিয়ে একসঙ্গে চা পান, পরে ছুরিকাঘাতে কিশোরকে হত্যা

সাজেদ হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

যশোর শহরের মাছ বাজারসংলগ্ন মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সাজেদ হোসেন রাজিম (১৭) নামের এক কিশোরকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সাজেদ সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর স্কুল মোড় এলাকার বাদল হোসেনের ছেলে। সে যশোর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি শহরের চুড়িপট্টি এলাকার একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করত।

পুলিশ ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে সাজেদ দোকানে কাজ করছিল। কয়েকজন যুবক দোকানে গিয়ে সাজেদকে পার্শ্ববর্তী একটি চায়ের দোকানে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে ওই যুবকদের সঙ্গে সাজেদ চা পান করে। এ সময় তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই যুবকেরা তাকে মারধর শুরু করলে নিজেকে বাঁচাতে দৌড় দেয় সাজেদ। এ সময় যুবকেরাও দৌড়ে সাজেদকে ধরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিহত স্কুলছাত্র সাজেদ হোসেনের স্বজনদের আহাজারি। গতকাল রাতে
ছবি: প্রথম আলো

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, যারা ছুরি মেরে হত্যা করেছে, তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে যারা মেরেছে, তারা নিহত সাজেদের বন্ধু। পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

চুড়িপট্টির যে দোকানে সাজেদ কাজ করত, সেই দোকানের পাশেই তাঁর চাচা দেলোয়ার হোসেনের দোকান। তিনি হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, বছরখানেক আগে সাজেদ চুড়িপট্টির একটি দোকানে কাজ শুরু করে। কারও সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল বলে জানা নেই। রাতে সাজেদ দোকানে বসে ছিল, এ সময় কয়েক যুবক তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে শোনেন তাকে কারা ছুরি মেরেছে।

হত্যাকারীরা সাজেদের পূর্বপরিচিত বলে মনে করেন তাঁর বাবা বাদল হোসেন। তা না হলে ডাক দিলে কেন সে দোকান থেকে বের হবে—প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘এলাকার যুবকেরা মাদক সেবনে ঝুঁকে পড়েছে। তাই নিজের ছেলেকে ভালো রাখতে পড়াশোনার পাশাপাশি বড় বাজারের একটি দোকানে কাজে দেছিলাম। নিরাপদ রাখার জন্য যে ছেলেরে কাজে দেছিলাম। সেই ছেলেটার প্রাণ দিতে হলো। আমি এখন কী করব? কী নিয়ে বাঁচব আমরা?’