মুন্সিগঞ্জে বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৩ শিশুর

বজ্রপাত
ফাইল ছবি

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় বজ্রপাতে তিন শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে উপজেলার ধামারন এলাকার একটি বিলে এ ঘটনা ঘটে। এই শিশুরা সম্পর্কে মামাতো–খালাতো ভাই–বোন। তারা বিলে শাপলা তুলতে গিয়েছিল। এ সময় আহত হয়েছে এক কিশোর।

মৃত শিশুরা হলো পশ্চিম ধামারন এলাকার মমিন আলীর ছেলে রবিউল হাসান (১২), সোনারং এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা আক্তার (৯) ও একই এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে মো. লামীম (১২)। আহত কিশোরের নাম সিফাত হোসেন (১৫)। সবাই ধামারন এলাকার একটি বিলে দুপুরে শাপলা তুলতে গিয়েছিল। এ সময় প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়।

মৃত রবিউলের বড় ভাই মো. মিঠু বলেন, ‘সানজিদা ও লামীম আপন খালাতো ভাই–বোন। ওরা দুজন আমার দুই চাচাতো বোনের ছেলে-মেয়ে। ওরা দুজন পাশের গ্রাম সোনা রং থেকে কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়নের ধামারন এলাকায় নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। আমার ভাইসহ চারজন বাড়ির পাশের একটি বিলের হাঁটুপানি থেকে শাপলা তুলছিল। এ সময় আকাশে মেঘ ডাকছিল। বেলা একটার দিকে ওদের তিনজনের সঙ্গে শাপলা তুলতে যাওয়া সিফাত বাড়িতে দৌড়ে আসে। আমাদের বলে তিনজন বিলের পানিতে পড়ে আছে। আমরা সেখানে যাই। ওদের পানিতে পড়া অবস্থায় দেখি। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

বেলা সোয়া দুইটার দিকে ওই তিন শিশুকে হাসপাতালে আনা হয় জানিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে মারা গেছে, বলা যাচ্ছে না। পরিবারের লোকজন বলছে, বজ্রপাতে শিশুরা মারা গেছে।

সানজিদার বড় চাচা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘আমার ভাই বিদেশ থাকে। আমরা ওকে কোলেপিঠে করে বড় করেছি। সারা দিন আমার ঘরে বসে থাকত। বাড়িতে ফিরলে কাছে এসে মেহেদির আবদার করত। আমার ভাতিজি আর মেহেদি চাইবে না।’

প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতাল থেকে লাশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান।

টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজিব খান প্রথম আলোকে বলেন, তিন শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। যেহেতু বজ্রপাতে ওই তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাই পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দেওয়া হতে পারে।