বিশ্বনাথ পৌর নির্বাচন
চতুর্মুখী লড়াইয়ের আভাস
শেষ মুহূর্তে কে বিজয়ের মালা পরবেন, তা নিয়েই এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভায় আগামী ২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এ পদে ভোটাররা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। তবে শেষ মুহূর্তে কে বিজয়ের মালা পরবেন, তা নিয়েই এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
ভোটাররা যে চারজনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা দেখছেন, তাঁরা হলেন দুইবারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন ও যুক্তরাজ্যের নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুমিন খান।
আজ সোমবার রাত ১২টায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হবে। পরে ২ নভেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট নেওয়া হবে।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অন্য তিন প্রার্থী হলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শিব্বির আহমদ, আল-ইসলাহ পৌর শাখার সভাপতি ফয়জুল ইসলাম ও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা সফিক উদ্দিন। প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করছেন। অন্যরা স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, জয় পেতে সব প্রার্থীই দিনরাত সমানতালে পাল্লা দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাঁরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এখানে চতুর্মুখী লড়াইযের সম্ভাবনাই বেশি। মুহিবুর রহমান আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদে না থাকলেও দুইবারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে। এটি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক আহমদকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলতে পারে। এই দুজনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
একাধিক ভোটারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েই দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন করেছিলেন। তবে এখনো তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। স্থানীয়ভাবে বিএনপির নেতা হিসেবে সুপরিচিত থাকায় ভোটের মাঠে জালাল উদ্দিনও শক্তিশালী প্রার্থী। তবে এখানে বিএনপির দুজন প্রবাসী নেতাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এটি স্থানীয় বিএনপির নেতার জয়ের পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা।
মুহিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এবং ইভিএমে কারচুপি না হলে আমিই জয়ী হব।’ ফারুক জানান, মুহিবুর রহমান আওয়ামী লীগের কেউ নন। তাঁর প্রার্থিতায় আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হবে না। ভোটাররা তাঁকে গ্রহণ করেছেন। তিনি বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
জালাল উদ্দিন জানান, তিনি বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ভোটারদের সঙ্গে তাই দীর্ঘ সময় ধরেই তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত। এদিকে মুনিম খান বলেন, ‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত। যেখানেই যাচ্ছি, ভোটাররা আগ্রহভরে আমাকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।’
বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, পৌরসভার মোট ভোটার ৩৫ হাজার ৪৭০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ২০টি এবং ভোটকক্ষ ১১৮টি। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬০ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আজ সোমবার রাত ১২টায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হবে। পরে ২ নভেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে।