১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের

কুষ্টিয়ায় সরকারি কলেজের ১৩ জন ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ। আজ বেলা একটায় কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর ট্রাফিক মোড়ে ঈশ্বরদী–কুষ্টিয়া–ঝিনাইদহ মহাসড়কেছবি: তৌহিদী হাসান

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ১৩ জন শিক্ষককে একটি মামলায় আসামি করার প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা একটা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

তাঁদের দাবি, আজকের মধ্যেই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে অবরোধের স্থানে এসে এ ঘোষণা দিতে হবে।

কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। এরপর তাঁরা বেলা একটার দিকে শহরের মজমপুর ট্রাফিক এলাকায় এসে মহাসড়ক অবরোধ করেন। একই দাবিতে গতকাল কলেজের সামনে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছিলেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মহাসড়ক অবরোধের কারণে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট
ছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১১ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া মডেল থানায় হওয়া একটি মামলায় সরকারি কলেজের ১৩ জন শিক্ষককে আসামি করা হয়েছে। কুষ্টিয়া শহরের কুঠিপাড়ার বাসিন্দা শেখ সবুজ রহমান (৪০) নামের এক ব্যক্তি মামলাটি করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকরাজনীতির হীন চক্রান্তে একটি কুচক্রী মহল পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে মামলাবাজির ব্যবসা করতেই এই মামলা করেছে। এতে শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চিত অন্ধকারে ঠেলে দেওয়াসহ কলেজ ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংসের কাজে লিপ্ত রয়েছে তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় লাগাতার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
অবরোধের কারণে দুই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও মিডিয়া) ফয়সাল মাহমুদ বারবার কথা বলেও কোনো সুরাহা করতে পারছেন না।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোল্লাহ মোহাম্মদ রুহুল আমিন মামলার ঘটনাকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কাণ্ডজ্ঞানহীন ও কুচক্রী মহলের নিন্দনীয় কাজের ফল চিহ্নিত করে বলেন, অবিলম্বে এর একটা সুরাহা করতে হবে। একই সঙ্গে এ–জাতীয় নিন্দনীয় কাজে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে আমলযোগ্য অভিযোগ নিয়ে এলে মামলা হতেই পারে। আমরা তদন্ত করে দেখব, ঘটনার সত্যতা আছে কি না। সত্যতা না পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে না।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ছয় মাস পর চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ১৩ জন শিক্ষকসহ মোট ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি হয়। মামলায় ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।