হবিগঞ্জ শহরের ভোটকেন্দ্রে একযোগে ককটেল বিস্ফোরণ

হবিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কে এভাবেই আগুন ধরিয়ে দেয় কে বা কারাছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জ শহরে শনিবার রাত নয়টার পর থেকে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রসহ বেশ কটি এলাকায় একযোগে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ সময় পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ছোটাছুটি করতে থাকেন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান জানান, ভোটকেন্দ্রকে উদ্দেশ করে দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালিয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত নয়টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর মোড়ে একদল তরুণ জড়ো হয়। তারা প্রথমেই শহরের প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সড়কের দুই পাশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর শহরের জে কে অ্যান্ড হাইস্কুল ভোটকেন্দ্রে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তরুণেরা। এরপর একযোগে হবিগঞ্জ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ছাড়া ইনাতাবাদ এলাকার প্রবেশপথে রাত নয়টার দি‌কে এক‌টি মু‌দিদোকানে আগু‌ন দি‌য়ে‌ছে কে বা কারা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষ‌ণিকভাবে জানা যায়‌নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলেন, এ সময় পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ছোটাছুটি করতে থাকেন নিজেদের আশ্রয়ে। শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আশ্রয় নেন ব্যবসায়ীরা। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানার একদল পুলিশ শায়েস্তানগর এলাকায় গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ছাড়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে সেখানে থাকা লোকজন। তাদের এলোপাতাড়ি হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পুলিশের দলটি কিছুটা পিছু হটে।

কিছুক্ষণ পরই বিজিবির একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এরপর পুলিশ ও বিজিবিকে একসঙ্গে ঘটনা সামাল দিতে গেলে হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে সড়ক দখল করে রাখা তরুণেরা তাদের অবস্থান থেকে সরে যায়নি। এভাবে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাতে সাড়ে ১০টার পরও থেমে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।

হবিগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অজয় চন্দ্র দেব বলেন, বিএনপির লোকজন শহরের ভোটকেন্দ্রে এসব ককটেল বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আগামীকাল রোববার ভোটের দিন লোকজন যাতে কেন্দ্রে ভোট দিতে না যান, সেটাই তাদের চেষ্টা। তবে পুরো পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।