আবাসন–সংকট দূর করতে ১০টি আবাসিক হল নির্মাণ করার প্রস্তাব করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাস-সংলগ্ন এলাকায় একটি মডেল থানা করারও প্রস্তাব করা হয়। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত ৫৬৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার পর সরকারের কাছে এসব প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের দুই দফা সংঘর্ষের পর এ জরুরি সিন্ডিকেট সভার আহ্বান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। উপস্থিত ছিলেন সিন্ডিকেট সদস্য ও সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও মো. কামাল উদ্দিন, সদস্য মোহাম্মদ আলী, সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভা শেষে সিন্ডিকেট সচিব ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, গত শনি ও রোববার শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের হামলার ঘটনায় সিন্ডিকেট তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি, শাটল ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভবন ও কটেজের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা নিরসন করা, দুটি অ্যাম্বুলেন্স কেনা, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা, রেলগেটে নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ১০টি হলের ৫টি ছাত্রীদের জন্য। প্রতিটি হলই হবে ১০ তলা। পাশাপাশি বিদ্যমান আবাসিক হলগুলো সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সংঘর্ষের ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে অনুরোধ জানানোর বিষয়েও সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে শনিবার রাত সোয়া ১২টায় জোবরা গ্রামে ভাড়া বাসার দারোয়ান এক ছাত্রীকে মারধর করেছেন, এমন খবরে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেদিন দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। পরদিন রোববার দুপুরে আবার সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে, ইট ও রডের আঘাতে আহত করা হয়। আহত হন অন্তত ২০০ জন। এ ছাড়া গ্রামবাসী আহত হন ১০ থেকে ১৫ জন। এ ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে সিন্ডিকেট। কমিটিতে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরীকে আহ্বায়ক করা হয়। এ ছাড়া সদস্য করা হয়েছে ছয়জনকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান সভা শেষে বলেন, ‘এখন থেকে ক্লাস নিয়মিত চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আহতরাও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।’