মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য

আজ সকাল নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়
ছবি: প্রথম আলো

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হকের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

আজ দুপুরে সাক্ষ্য দেন সোনারগাঁ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান দর্জি ও এসআই ওবায়েদ হোসেন। এ নিয়ে এই মামলার বাদীসহ মোট ১৫ জন সাক্ষ্য দিলেন। নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আজ চারজনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা থাকলেও দুজন হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সকাল নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষীরা আদালতে বলেছেন, ঘটনার দিন তাঁরা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছ থেকে খবর পেয়ে রয়েল রিসোর্টে যান। সেখানে মামুনুল হক ও তাঁর সঙ্গে থাকা নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মামুনুল হক এলোমেলো জবাব দেন। ওই নারী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, মামুনুল হক তাঁকে বিয়ের কথা বলে ওই রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করেছেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মামুনুল হককে আবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়
ছবি: প্রথম আলো

আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যের সঙ্গে মামলার এজাহারের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। জেরায় সাক্ষীরা অনেক প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। আজকাল বিয়ে ছাড়াই সন্তান হয়ে যাচ্ছে, বিয়ের কাবিননামা কেউ খোঁজে না। সবাই জানে, একটি সাজানো মামলায় মামুনুল হকের বিচার করা হচ্ছে।

গত বছরের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে কথিত স্ত্রীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুল ও ওই নারীকে ছিনিয়ে নেন। ঘটনার ১৫ দিন পর মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।