জামালপুরে অটোরিকশাচালককে হত্যার মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় অটোরিকশাচালক লাইজু মিয়াকে (২২) হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আনোয়ার ছাদাত এ আদেশ দেন।

দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলার সামর্থবাড়ী গ্রামের মো. সোহাগ (৩৩), ঝালুরপাড়া গ্রামের মো. মনি তাহেরী ওরফে মনির হোসেন (২৯), একই গ্রামের মো. জাকির হোসেন (৩০) ও মো. রুবেল মিয়া (২৯)। তাঁদের মধ্যে সোহাগ ও জাকির হোসেন পলাতক।

নিহত লাইজু মিয়া সরিষাবাড়ী উপজেলার বগারপাড়া গ্রামের মো. আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় অটোরিকশাচালক ছিলেন। তাঁকে হত্যা করে অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যান দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, লাইজু মিয়ার বাবা আমজাদ হোসেন একজন অটোরিকশাচালক। বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য লাইজু প্রতিদিন বিকেলে বাবার অটোরিকশাটি চালানোর জন্য নিয়ে বের হতেন। আবার রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসতেন। ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে লাইজু মিয়া তাঁর বাবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে হয়ে রাতে আর ফিরে আসেননি। তাঁর বাবা ও আত্মীয়স্বজনেরা খোঁজাখুঁজিও করেও কোনো সন্ধান পাননি। পরদিন ১ অক্টোবর ভোরে সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি সড়কের পাশের একটি মাঠে লাইজু মিয়ার লাশ পাওয়া যায়। তাঁকে হত্যা করে অটোরিকশাটি নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তাঁর বাবা আমজাদ হোসেন লাশ উদ্ধারের পরদিন অর্থাৎ ২ অক্টোবর সরিষাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারক আসামিদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত কৌঁসুলি মো. সফিকুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও মোজাম্মেল হক।

আইনজীবী মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চার মাসের তদন্ত শেষে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আসামিদের মধ্যে দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এতে প্রমাণিত হয় আসামিরা লাইজু মিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

আদালতে আসামিদের কোনো স্বজনকে না পাওয়ায় তাঁদের কারও বক্তব্য নেওয়া যায়নি।