স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে যুবককে হত্যা

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

নাটোরের লালপুরে টেলিভিশনের মেকানিক (মেরামতকারী) সোহেল হোসেন হত্যাকাণ্ডে রহস্য উদ্‌ঘাটন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার এক ব্যক্তি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দির তথ্য উদ্ধৃত করে পিবিআই জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তি তাঁর ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে সোহেল হোসেনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পান এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। পরে তাঁর লাশ সড়কের পাশে ফেলে দেন।

নিহত সোহেল হোসেন (৩৫) লালপুরের পুরাতন ঈশ্বরদী গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। ১২ মার্চ সকালে ওই এলাকার একটি সড়কের পাশ থেকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোহেল হোসেনের স্ত্রী থানায় মামলা করে। ওই ঘটনায় একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী কুলসুমা খাতুনকে (২৭) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শফিকুল গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পিবিআইয়ের নাটোর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোহেল হোসেন হত্যার ঘটনায় লালপুর থানায় মামলা হয়েছে। পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। তদন্তের দায়িত্ব পান পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম। ঘটনার তিন দিনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত শফিকুল ইসলামকে রাজশাহীর রাজপাড়া থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর স্ত্রী কুলসুমা খাতুনকে লালপুরের কদিমচিলান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি গামছা উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার শফিকুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে নাটোর কারাগারে পাঠানো হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জবানবন্দির তথ্য উদ্ধৃত করে জানান, আসামি শফিকুল ইসলামের স্ত্রী কুলসুমা খাতুনের সঙ্গে সোহেল হোসেনের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। স্বামী বাজারে থাকায় কুলসুমা খাতুন ১১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ফোন করে সোহেলকে তাঁর বাড়িতে ডেকে নেন। শফিকুল রাত সাড়ে ৯টায় বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে সোহেলকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পান। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। ঘরে ঢুকে সোহেলকে প্রথমে ঘুষি মারেন। পরে গামছা দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করেন। সোহেলের মরদেহ বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে সড়কের পাশের ভুট্টার জমির আলে ফেলে রেখে আসেন। এরপর ওই দম্পতি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

ফরিদুল ইসলাম আরও বলেন, প্রথমে নিহত সোহেলের মুঠোফোন পরীক্ষা করা হয়। তাঁর সঙ্গে যাঁদের ঘটনার নিকটবর্তী সময়ে কথা হয়েছে, তাঁদের তালিকা বের করা হয়। এতে কুলসুমার সঙ্গে তাঁর কথা বলার প্রমাণ পাওয়া যায়। কুলসুমা ও তাঁর স্বামী পলাতক থাকার বিষয়টি নজরে এলে সন্দেহ হয়। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা সোহেলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।