জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার ঘটনায় তিন দিনেও মামলা হয়নি

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন দিনেও মামলা হয়নি। সিটিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ ইতিমধ্যে ১০ জনকে আটক করেছে। তাঁরা বকশীগঞ্জ থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। মামলা দায়েরে বিলম্ব হওয়ায় সাংবাদিক সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা প্রশ্ন তুলছেন।

জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ আজ শনিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের বিষয়ে কোনো বিলম্ব নেই। সাংবাদিক গোলাম রব্বানির পরিবারের পক্ষ থেকেই বিলম্ব করা হয়েছে। তবে মামলার ড্রাফটিং (খসড়া) হচ্ছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা দায়ের হবে। পরে একটি সাংবাদ সম্মেলনও হবে। সেখানে বিস্তারিত জানানো হবে।’

আরও পড়ুন

হামলার ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে ছয়জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন গোলাম কিবরিয়া ওরফে সুমন, মো. তোফাজ্জল, মো. কফিল উদ্দিন, মোহাম্মদ আয়নাল হক, মো. শহীদ ও ফজলুল হক। তাঁদের সবার বয়স ২৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। গোলাম কিবরিয়ার বাড়ি ঘটনাস্থল পাটহাটি এলাকায়। তিনি যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া আটক আয়নাল হক অভিযুক্ত সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলমের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। বাকি চারজনের নাম ও পরিচয় পুলিশ এখনো প্রকাশ করেনি।

এদিকে ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ও তাঁর ছেলে পলাতক। নিহত সাংবাদিকের পরিবার ও স্থানীয় সাংবাদিকেরা অভিযোগ তুলেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবহেলার কারণেই তাঁদের দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এ ব্যাপারে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ও সিসিটিভির ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের হোতা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ নিজেও মূল হোতাকে চিহ্নিত করেছেন। তাহলে এই মামলা নিয়ে বিলম্ব করা রহস্যজনক। না হলে কেন তিন দিনেও মামলা হলো না। মামলা দায়েরের বিলম্বের মধ্য দিয়ে যাতে কোনো অপরাধী রক্ষা না পায়।

বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম
ছবি: সংগৃহীত

মামলা দায়েরর বিষয়ে সাংবাদিক গোলাম রব্বানির মেয়ে জান্নাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা একজন সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। সেটা আমার বাবা প্রমাণ করেছেন। আমাদের পরিবারে আমার বাবাই ছিলেন ছায়া। আর কেউ নাই। তার মধ্যে পরিবারের সবাই অসুস্থ। ফলে আমরা এখনো থানায় যেতে পারিনি।’

আরও পড়ুন

গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। পথে বকশীগঞ্জের পাটহাট এলাকায় তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিলঘুষি ও ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।