‘মীর মুগ্ধ তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার প্রতীক’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর স্মরণসভা। শুক্রবার বিকেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনেছবি: সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মুগ্ধ। গত বছরের মার্চে স্নাতক শেষ করে তিনি খুলনা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ওই বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি শহীদ হন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান ও ট্রেজারার অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. নাজমুস সাদাত। স্বাগত বক্তব্য দেন গণিত ডিসিপ্লিন প্রধান অধ্যাপক মো. আজমল হুদা।

সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে মীর মুগ্ধর আত্মত্যাগ দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক। তাঁর স্মৃতি রক্ষায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে। ভবিষ্যতেও আরও কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এখন থেকে ১৮ জুলাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস’ হিসেবে পালিত হবে, যা ইতিমধ্যে সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।

বক্তারা বলেন, যাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন, তাঁদের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে খুনিদের দোসরদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করেন মীর মুগ্ধর বন্ধু মো. জাকিরুল ইসলাম, জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ শাফিল। অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজুল আবেদিন, আল শাহরিয়ার, আয়মান আহাদ, সৈয়দ মো. রুম্মান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন কারি মুস্তাকিম বিল্লাহ। এরপর জুলাই শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী ছাত্রবিষয়ক পরিচালক আইরিন আজহার ঊর্মি। স্মরণসভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে তিনটায় গণিত ডিসিপ্লিনে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ স্মৃতি কর্নার’ এবং ‘শহীদ মীর মুগ্ধ পানি কর্নার’ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

এ ছাড়া বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শহীদ মীর মুগ্ধসহ সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।