প্রশাসনের নিদের্শনার পরও সেন্ট মার্টিন ছাড়লেন না আড়াই শতাধিক পর্যটক

সেন্ট মার্টিন
প্রথম আলো ফাইল ছবি

বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রশাসন পর্যটকদের আজ সোমবার বিকেলের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন ছাড়ার নির্দেশনা দিলেও সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি ছাড়েননি আড়াই শতাধিক পর্যটক। আজ বেলা তিনটায় সেন্ট মার্টিনের জেটি ঘাট থেকে পর্যটকদের নিয়ে তিনটি জাহাজ টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়। জাহাজ তিনটিতে পর্যটকসহ দুই হাজারের কাছাকাছি যাত্রী আছেন।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ও জেটি ঘাটের ইজারাদারের টোল আদায়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে মাইকিং করা হয়েছে। পর্যটকদের দ্বীপ ছাড়তে বলা হয়েছিল। কিন্তু এরপরও কিছুসংখ্যক পর্যটক সেন্ট মার্টিনে রয়ে গেছেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে হয়তো দু–তিন দিন জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। দ্বীপে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, সাগর কিছুটা উত্তাল ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, টেকনাফের দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেয়ারি সিন্দাবাদে ১৮০ জন, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনে ২৭২ ও এমভি বার আউলিয়া জাহাজে করে ৭২৭ জন পর্যটক সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে গেছেন। জাহাজগুলো বেলা একটার মধ্যে সেন্ট মার্টিন জেটিতে পৌঁছায়। এর আগে শনি ও রোববার ভ্রমণে গিয়ে রাতযাপনের জন্য ছিলেন সাড়ে সাত শতাধিক পর্যটক।

কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. শাহ আলম ও এমভি বার আউলিয়া জাহাজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম বলেন, তিনটি জাহাজে করে সেন্ট মার্টিনে অবস্থান করা পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজঘাটে পৌঁছানোর পর পর্যটকেরা নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বা সতর্কসংকেত প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে। তাই পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন থেকে আজ জাহাজে করে টেকনাফে ফিরতে বলা হয়েছিল। আর কোনো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে আছেন কি না, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ নির্দেশনা অমান্য করে দ্বীপে অবস্থান করেন, তাহলে সেটি তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার।

আরও পড়ুন

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৫৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১৯ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।