আবদুর রশিদের মৃত্যুর বিষয়ে গয়েশ্বর মিথ্যাচার করেছেন: রেলমন্ত্রী

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় মারা যাওয়া আব্দুর রশিদের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। শুক্রবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বিএনপি নেতা আবদুর রশিদ ওরফে আরেফিনের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মিথ্যা কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পাথরাজ চন্দনপাড়া এলাকার আবদুর রশিদের বাড়িতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তাঁর পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন রেলমন্ত্রী।

নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আবদুর রশিদের মৃত্যুর বিষয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এই বাড়িতে এসে মিথ্যা কথা বলেছেন। সেটা হলো, পুলিশের গুলিতে বা পুলিশের আঘাতে আরেফিন মারা গেছেন। এই কথা ভিত্তিহীন। সেখানে পুলিশের লাঠিচার্জের ফলে দৌড়াদৌড়ি হয়েছে। কিন্তু তাঁর শরীরে আঘাত করেনি পুলিশ। এই মিথ্যাচারটা উনি না করলেও পারতেন। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে আমি নিজে খোঁজখবর নিয়েছি। তাঁর সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রমাণ করে যে তিনি হার্ট অ্যাটাকেই মারা গেছেন।’

এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশের প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬ সালে আবদুর রশিদের বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিয়েছেন, সেখানে দৌড়াদৌড়ি, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এগুলো হয়েছে। এগুলোরই কনসিকোয়েন্সে বুকের ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে তিনি মারা যান। কিন্তু যে কথাটা বিভিন্নভাবে পত্রপত্রিকা বা টেলিভিশনে এসেছে যে পুলিশের আঘাতে বা গুলিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এগুলো সঠিক নয়।’

নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আবদুর রশিদ একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। যদি তিনি সেখানে অংশ না নিতেন, তাহলে হয়তো এই দুর্ঘটনা না–ও ঘটতে পারত। এই মৃত্যুর জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে শোক প্রকাশ করছি। যদিও রাজনৈতিকভাবে আমাদের ভিন্নমত ছিল। কিন্তু পারিবারিকভাবে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এই পরিবারে তিনিই একমাত্র বিএনপি সমর্থক ছিলেন, তাঁর ভাইবোনেরা কিন্তু আওয়ামী লীগের সমর্থক। আমরা স্থানীয়ভাবে সবাই কিন্তু এই মৃত্যুর জন্য মর্মাহত। আমি নিজেও তাঁর কবর জিয়ারত করেছি।’  

এ সময় রেলমন্ত্রী আবদুর রশিদের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানের হাতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে নগদ টাকা তুলে দেন। বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াহেদুজ্জামান সুজা, রেলমন্ত্রীর ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য কৌশিক নাহিয়ান ওরফে নাবিদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

গত শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় শহরে বিএনপির গণমিছিলে পুলিশ ও বিএনপির নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মিছিলে অংশ নেওয়া আবদুর রশিদ মারা যান। তিনি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পুলিশ ও ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আবদুর রশিদ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে গত বুধবার আবদুর রশিদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।