কুমিল্লার দেবীদ্বারে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু

পানিতে ডুবে মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার দেবীদ্বারে পানিতে ডুবে তিন শিশু একই দিনে মারা গেছে। আজ শনিবার পৃথক স্থানে এসব ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে কুমিল্লায় পানিতে ডুবে সাতজন শিশু মারা গেল।

দেবীদ্বারে নিহত তিন শিশু হলো দেবীদ্বার পৌর শহরের বিজলিবাঞ্জার এলাকার রংমিস্ত্রি অলিউল্লাহ একমাত্র মেয়ে রাইসা আক্তার (৭), পৌর শহরের বড় আলমপুর এলাকার সোহরাব হোসেন সোহাগের দেড় বছরের মেয়ে সালমা আক্তার ও দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের অজ্ঞাতনামা তিন বছরের এক শিশু।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। অবুঝ শিশুরা পানিতে নেমে ডুবে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের আরও সচেতন হতে হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টায় দেবীদ্বার পৌরসভার বিজলিবাঞ্জার এলাকার রংমিস্ত্রি অলিউল্লাহ একমাত্র মেয়ে রাইসা আক্তারের মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে ভাসতে দেখেন প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। এরপর শিশুটিকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। অবুঝ শিশুরা পানিতে নেমে ডুবে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের আরও সচেতন হতে হবে।
মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ

রাইসার চাচা ফারুক মিয়া বলেন, বাড়ির অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে যায় রাইসা। সবার বাচ্চা ফিরে এলেও রাইসা ফেরেনি। পরে তার লাশ পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। রাইসা বিজলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে বিকেল সাড়ে চারটায় দেবীদ্বার পৌর এলাকার বড় আলমপুরে সাংবাদিক সফিউল আলমের বাড়ির পুকুরে সোহরাব হোসেনের স্ত্রী গোসল করতে যান। এ সময়ে তাঁদের মেয়ে সালমা অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। শিশুটির মা ঘরে এসে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ওই পুকুরে সালমাকে পানিতে ভাসতে দেখেন। স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে বিকেল পাঁচটায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আজ দুপুরে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের বাড়ির পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তিন বছরের একটি শিশুকে উদ্ধার করে তার স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেজিস্টারে নাম-ঠিকানা না দিয়েই স্বজনেরা শিশুটির লাশ নিয়ে বাড়ি চলে যান।

এর আগে ২৫ এপ্রিল চান্দিনা উপজেলায় দুটি শিশু ও দাউদকান্দি উপজেলায় দুটি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।