মতলব দক্ষিণে গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে রূপালী বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূ ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার উপাদী দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘোড়াধারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই পুলিশ ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন ওই নারীর স্বামী জামাল মিয়া।
নিহত রূপালী বেগমের বাবার নাম কালু পাটোয়ারী। তাঁর স্বামী জামাল মিয়ার বাড়ি বরিশালে। জামাল রূপালীর দ্বিতীয় স্বামী। রূপালীর প্রথম স্বামী কয়েক বছর আগে মারা যান। দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি মতলব দক্ষিণের ঘোড়াধারী গ্রামে পৈতৃক বাড়িতেই থাকতেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর টিকটকের মাধ্যমে জামালের সঙ্গে রূপালীর পরিচয় হয়। পরে তাঁরা বিয়ে করেন। জামাল চারটি বিয়ে করেছেন, রূপালী ছিলেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগে থাকত। প্রায় ১৫ দিন আগে জামাল রূপালীর কাছ থেকে জোর করে স্বর্ণালংকার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় রূপালী চাঁদপুরের একটি আদালতে জামালের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। জামাল একাধিকবার রূপালীকে হত্যার হুমকি দেন বলেও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
রূপালীর বড় ভাই আলিম উদ্দিন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে জামাল। আমি তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৈতৃক বাড়িতে রূপালী ও জামালের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘুমিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে জামাল রূপালীর বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। পরে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে তিনি পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় ঘর থেকে প্রায় ২২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন সেটও নিয়ে যান।
ঘটনার কিছুক্ষণ পর রূপালীকে ঘরে না পেয়ে স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে সেপটিক ট্যাংকে তাঁর লাশ দেখতে পান তাঁরা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহাম্মদ বলেন, ওই গৃহবধূর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।