শিক্ষার্থীদের দিয়ে গাছে গাছে ‘ভর্তির বিজ্ঞাপন’ টাঙালেন অধ্যক্ষ

শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে টাঙানো হচ্ছে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞাপন

পাকা সড়কের পাশে সারি সারি গাছ আর বিদ্যুতের খুঁটি। সেখানে টাঙানো ‘শিক্ষার্থী ভর্তির ফেস্টুন’। ঝুঁকি নিয়ে মইয়ে উঠে এসব ফেস্টুন টাঙাচ্ছে একদল কিশোর। তাদের পরনে স্কুলের পোশাক। নিচ থেকে শিক্ষকেরা নির্দেশনা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের।
আজ সোমবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর এলাকায় এই দৃশ্যের দেখা মেলে। ঝুঁকি নিয়ে ভর্তির বিজ্ঞাপন টাঙানো কিশোরেরা ওই ইউনিয়নের মাদার মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ থেকে আখানগর সড়কের রহিমানপুর এলাকায় দেখা যায়, পাঁচ কিশোর বাঁশের মই বেয়ে গাছে উঠে বিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তির ফেস্টুন টাঙাচ্ছে। ফেস্টুনে লেখা—‘মাদার মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্লে থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি চলছে’।

ফেস্টুন টাঙানোর কাজে ব্যস্ত এক ছাত্র বলে, ‘আমরা সবাই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ) স্যার আমাদের নিয়ে ফেস্টুন টাঙাতে বলেছেন। তাই আমরা এসেছি।’

এ সময় মইয়ের মাথায় ছিল অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী। ঝুঁকির কথা জানতে চাইলে সে বলে, ফেস্টুন টাঙানোর সময় মই থেকে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। তবে শিক্ষকের কথা অমান্য করতে পারেনি। তাই তারা ফেস্টুন টাঙাতে এসেছে।

ওই শিক্ষার্থীর কথা শেষ না হতেই নিচে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক শিক্ষককে ডেকে বলেন, ‘ফেস্টুন টাঙানোর অভিযোগ এসেছে। আপনি চলে আসেন।’
পরে ওই ব্যক্তির কাছে তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ। নাম মো. নুরুজ্জামান।’

শিক্ষার্থীদের দিয়ে ফেস্টুন টাঙানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুজ্জামান বলেন, ‘কদিন ধরে ফেস্টুনগুলো পড়ে আছে। টাঙানোর লোক পাচ্ছি না। ওদের নিয়ে স্কুলের কাছে কয়েকটি ফেস্টুন টাঙাতে বের হয়েছি। বেলা সাড়ে ১১টায় ক্লাস শুরু হবে। এর আগেই ফিরে যাব।’

এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন মহিদুল ইসলাম নামের ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক। তিনি বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই লেখাপড়ার জন্য। তদের গাছে উঠিয়ে স্কুলের বিজ্ঞাপন টাঙানো একেবারেই ঠিক নয়।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়টি তাঁর দপ্তরের আওতাভুক্ত নয়। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে ফেলে গাছে গাছে ভর্তি বিজ্ঞাপন টাঙানো অনৈতিক। শিক্ষকদের কাছে এটা কাম্য নয়।