বিদ্যুতের দাবিতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দক্ষিণ সুরমা ও ওসমানীনগর উপজেলার গ্রাহকেরা।
গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার ও ওসমানীনগর উপজেলার খাশিকাপন এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়।
এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়কে অবস্থান নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় কয়েক দিন থেকে বিদ্যুৎবিভ্রাট চরমে পৌঁছেছে। দিন ও রাতের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে সাধারণ গ্রাহকেরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে দক্ষিণ সুরমা, ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় বিদ্যুৎবিভ্রাট শুরু হয়। পরে শনিবার সকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরে এলেও আবার কয়েক দফা বিদ্যুৎবিভ্রাটের ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার সকালে ঘণ্টাখানেক এসব এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। বিকেলের পরও কয়েকবার বিদ্যুৎবিভ্রাট ঘটে। একপর্যায়ে ওই এলাকায় বাসিন্দারা দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এবং ওসমানীনগর উপজেলার খাশিকাপন এলাকায় সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামির এলাকার বাসিন্দা রাসেল আহমদ বলেন, এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। এদিকে গরমের মধ্যে অসহ্য অবস্থা। বয়স্ক ও শিশুরা খুব কষ্ট পাচ্ছে। এমন অবস্থার প্রতিবাদ জানাতে সড়কে অবস্থান নেওয়া হয়েছিল।
ওসমানপুর গ্রামের বাসিন্দা কাওসার আহমদ বলেন, কয়েক দিন ধরে একই অবস্থা। রাতে বিদ্যুৎ থাকে না। দিনের বেলা কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ থাকে, আবার চলে যায়। গরমের কারণে রাতে ঘুমানো দায় হয়ে গেছে।
অবরোধের খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পল্লী বিদ্যুতের ওসমানীনগর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, গতকাল বিশ্বনাথের মূল সরবরাহ সংযোগ ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছিল। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।
সিলেটের ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাঈন উদ্দিন বলেন, গতকাল রাতে স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভের কারণে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে তৎক্ষণাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। এ সময় পুলিশের পাশাপাশি সেখানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঝলক পাল বলেন, ‘আমরা এলাকার মানুষকে গতকাল রাতে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি। সারা দেশেই বিদ্যুতের এমন অবস্থা চলছে। তবে এমন অবস্থায় জনভোগান্তি যেন কম হয়, সে জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’