সাতক্ষীরায় বিএনপি কর্মী হত্যার অভিযোগে সাবেক এমপি-এসপিসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মামলাপ্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেনকে (৩২) গুলি করে হত্যার অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মীর মোস্তাক আহমেদ (রবি) ও সাবেক পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনার চার বছর পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা সদরের আমলি আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহত জাকির হোসেনের বড় ভাই মো. আবুল কাসেম গাজী।

আদালতটির বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (রফিকুল ইসলাম) এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। নিহত জাকির হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির কর্মী ছিলেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. মহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক হাসানুর রহমান, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল মো. আনোয়ার হোসেন, সাতক্ষীরা জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সাইফুল করিম, ব্রহ্মরাজপুরের গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান, জাহানাবাজ গ্রামের আব্দুর রশিদ, মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোক্তার হোসেন, জিয়ালা গ্রামের আব্দুস ছালাম সানা, দোহাখোলা গ্রামের মাসুদ রানা, ধলিহর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. মিজান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জান, ঘোনা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান ও ধলিহর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা বাজারের বিপ্লবের চায়ের দোকানে জাকির হোসেন তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটার দিকে ক্যারাম বোর্ড খেলছিলেন। এ সময় পুলিশ এসে জাকির হোসেনের হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে মারধর করে। পরে তাঁকে একটি মোটরসাইকেলে করে সাতক্ষীরার দিকে নিয়ে গিয়ে গোপন স্থানে আটক রাখা হয়। মামলার বাদী মো. আবুল কাসেম গাজী তাঁর ভাইকে ডিবি, সিআইডি অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে কোনো সন্ধান পাননি। ২ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে দামারপোতা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের নিচে বেতনা নদীর চরে জাকির হোসেনের হাত-পা ও চোখ বেঁধে দুটি গুলি করে হত্যা করা হয়। পরের দিন তিনি (আবুল কাসেম গাজী) সাতক্ষীরা সদর থানায় হাজির হয়ে তাঁর ভাইকে মৃত দেখতে পান। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সদর থানা-পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশটি মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে পারিবারিক গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হয়।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের কোনো নির্দেশনা তাঁরা এখনো পাননি। নির্দেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।