কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদকে হুঁশিয়ারি দিলেন এই আসনে আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আবদুল কাহার আকন্দ।
তিনি নূর মোহাম্মদের উদ্দেশে বলেন, ‘আর এক পা আগাবেন না। হয় নৌকার সঙ্গে থাকুন, না হয় কটিয়াদী ছেড়ে ঢাকা চলে যান। আর যদি আপনি একটি কথা নৌকার বিরুদ্ধে বলবেন, তাহলে আপনার বাড়ি ঘেরাও করা হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর সদর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নৌকার প্রার্থী আবদুল কাহার আকন্দ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘নৌকার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র চলছিল। যড়যন্ত্রে আমার যাঁরা চেয়ারম্যান, মেম্বার ছিলেন, যাঁরা আওয়ামী লীগের লোকজন ছিলেন, তাঁদের ডেকে নিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ভয় দেখিয়ে ট্রাক মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এই ভয়ে অনেকে আজ ঘরে বসে আছেন।’ জনতার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা জড়িত আছেন, আপনাদের আমি বলতে চাই। এটার পেছনে আমাদের বর্তমান এমপি নূর মোহাম্মদ জড়িত আছেন। এই নূর মোহাম্মদ আমার লোকগুলোকে ডেকে নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ট্রাকের লোকদের সেই টাকা দিচ্ছেন। এটার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।’
জনসভায় পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী এম এ আফজল। এ সময় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দেন।
কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-২ আসন। এখান থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, আবদুল কাহার আকন্দ ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এর মধ্যে আবদুল কাহার আকন্দকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মো. সোহরাব উদ্দিন ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। নূর মোহাম্মদ মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে এই আসনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব) আখতারুজ্জামানের ট্রাক প্রতীককে সমর্থন জানান। এ নিয়ে এই আসনের নির্বাচনের মাঠ গরম আছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে আজ বুধবার সকালে নূর মোহাম্মদকে মুঠোফোনে কল করে পাওয়া যায়নি। তবে গত সপ্তাহে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অন্য প্রার্থীদের চেয়ে আখতারুজ্জামানকে তাঁর কাছে সাহসী ও যোগ্য মনে হয়েছে, তাই তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। নিজের অনুগত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের আখতারুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আখতারুজ্জামান এক দিকে দলের বিরোধিতা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, অপর দিকে বক্তৃতায় একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।