বিদেশ থেকে আসা কফিন খুলে স্বজনেরা দেখলেন লাশটি আরেকজনের

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দামোধরতুপি গ্রামের আফসর মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রিসে মারা যান সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার আফসর মিয়া (৪০)। এরপর গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক লাশভর্তি কফিনটি তাঁর স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়। স্বজনেরা লাশটি সুনামগঞ্জে নিয়ে আসেন। আজ শনিবার সকালে এলাকায় মাইকিং করে জানাজার সময় জানানো হয়। খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু জানাজার আগে কফিন খুলে দেখা যায়, লাশটি আফসর মিয়ার নয়। পরে জানাজা, কবর আর হয়নি।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার দামোধরতুপি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শান্তিগঞ্জ থানা-পুলিশ জানায়, কফিনে আসা লাশটি মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার শিলনপুর গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিনের (৫২)। সম্প্রতি তিনি গ্রিসে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

আফসর মিয়ার লাশ ১৩ মার্চ দেশে আসবে জানিয়ে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গ্রিস থেকে লাশ পাঠানোর সময় জালাল উদ্দিনের কফিনে ভুলবশত আফসর মিয়ার নাম-ঠিকানাযুক্ত করায় এই সমস্যা হয়েছে। জালাল উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় লাশটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাঁর স্বজনেরা লাশটি বুঝে নেবেন।

আফসর মিয়া দামোধরতুপি গ্রামের জমসিদ আলীর বড় ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে গ্রিসে যান আফসর মিয়া। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও ছয় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর আরেক ভাই এমরান মিয়াও গ্রিসে আছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আফসর মিয়া লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গ্রিসের একটি হাসপাতালে মারা যান। এমরান মিয়া ভাইয়ের লাশ দেশে আনার সব প্রক্রিয়া শেষ করে নিজেও দেশে চলে আসেন।

গতকাল আফসর মিয়ার লাশ দেশে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী পরিবারের লোকজন বিমানবন্দরে গিয়ে লাশভর্তি কফিনটি বুঝে নেন। এরপর গতকাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাঁরা লাশটি নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান। আজ শনিবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তাঁর দাফন হওয়ার কথা ছিল। সকালে গ্রামবাসী ওই বাড়িতে জড়ো হন। খোঁড়া হয় কবরও। কিন্তু জানাজার আগে কফিন খুলে দেখা যায়, লাশটি আফসর মিয়ার নয়।

আফসর আফসর মিয়ার ভাগনে তোফায়েল আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে তিনি শুক্রবার কফিনভর্তি লাশটি বুঝে নেন। কফিনের ওপরে তাঁর মামার নাম-ঠিকানা লেখা ছিল। কিন্তু আজ সকালে কফিন খুলে দেখেন লাশটি তাঁর মামার নয়। এরপর তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানান।