সাতক্ষীরায় গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন

আদালত
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এক গৃহকর্মীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আবদুল হালিম বিশ্বাস নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জি আযম এ রায় ঘোষণা করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল হালিম যশোরের কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রামের বাসিন্দা। আসামি হালিম পলাতক থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই আদালত রায় ঘোষণা করেন। মামলার অন্য আসামি পরিমল রায়কে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জহুরুল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার ১৬ জন সাক্ষীকে জেরা, জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা করে আদালত হালিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অন্য আসামি পরিমল রায়কে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

খালাস পাওয়ার পর আদালতের বারান্দায় পরিমল রায় বলেন, তাঁকে বিনা অপরাধে ১৯ বছর আদালতে আসতে হয়েছে। এরপরও ন্যায়বিচার হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

আদালত ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, ১৯৯৮ সাল থেকে হালিম মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শিবপুরে থাকতেন। অন্যদিকে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার এক নারী নানার বাড়ি তালা উপজেলার বারুইআটি গ্রামে থেকে বিভিন্ন বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। ২০০১ সালে ওই নারীর সঙ্গে হালিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৩ সালের ২১ জুলাই বিকেলে নানার বাড়ি থেকে বের হয়ে ওই নারী আর বাড়িতে ফেরেননি। ২৩ জুলাই সকালে তালা উপজেলা পরিষদের সামনের একটি ডোবা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ২৮ জুলাই তালা থানার উপপরিদর্শক মশিয়ার রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় হালিমকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সাতক্ষীরার নালিশি আদালতের বিচারক ইব্রাহীম খানের কাছে হালিম হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আবদুল হাই আদালতে হালিম ও তালার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক মোতাজ্জিদুর রহমান মামলাটির আবারও তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে তালা থানার উপপরিদর্শক লুৎফর রহমান একই বছরের ২৪ অক্টোবর আগের অভিযোগপত্র বহাল রেখে আদালতে জমা দেন। ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর থেকে হালিম পলাতক।