মঠবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী আমিরুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে নিহত আমিরুল স্ত্রী সীমা আক্তার, তাঁর দুই শিশুসন্তানসহ গ্রামের শতাধিক মানুষ অংশ নেন
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম (৪০) হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার সকাল ১০টায় উপজেলার চালিতাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে নিহত আমিরুল স্ত্রী সীমা আক্তার, তাঁর দুই শিশুসন্তানসহ গ্রামের শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে গরু ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আমিরুল ইসলাম উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন হাফিজুর রহমান (৫০), তাঁর ছেলে তাহসিন আরবি (১৮) ও আলিয়ার রহমান (৪৫)। অন্য দুই আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক।

আরও পড়ুন

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য কবির হোসেন, শিক্ষক মোকছেদ আলী, আমিরুলের ভাই নূরুল ইসলাম, আমিরুলের স্ত্রী সীমা আক্তার প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা গ্রেপ্তার আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন মামলা তুলে নিতে নিহতের পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছেন। এ হত্যাকাণ্ডে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে অপরাধীরা একের পর এক অন্যায় করে যাবেন। তাই এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার করে ফাঁসি দিতে হবে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমিরুল ইসলামের সঙ্গে একই এলাকার হাফিজুর রহমানের পরিবারের পূর্বশত্রুতা ছিল। হাফিজুর রহমানের ছেলে তাহসিন ওই এলাকার এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করতেন। মাসখানেক আগে ওই তরুণীকে অন্য এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে সহযোগিতা করেন আমিরুল ইসলাম। এর পর থেকে হাফিজুর, তাঁর ছেলে তাহসিনসহ কয়েকজন আমিরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে চালিতাবুনিয়া গ্রামের খানকায় সালেহিয়া দ্বীনিয়া নুরানি মাদ্রাসার মাঠে মাহফিলে যান আমিরুল ইসলাম। রাত দেড়টার দিকে মাহফিল থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে এক জায়গায় আগে থেকে ওত পেতে থাকা কয়েক যুবক আমিরুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন।

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ইতিমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘মঠবাড়িয়ায় মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।