সাঈদীর মৃত্যুতে ফেসবুকে পোস্ট, পদ হারালেন চট্টগ্রামের ৬ ছাত্রলীগ নেতা

ছাত্রলীগের দলীয় লোগো

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমবেদনা জানিয়ে পোস্ট করায় ছয় নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, সাতকানিয়া উপজেলা ও সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে তাঁদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তিন সংগঠনের পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মো. রুস্তম, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আফসার ও পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ তারেক এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কর্মসংস্থানবিষয়ক উপসম্পাদক সাজেদুল হক ও সহসম্পাদক শাহজাহান হাবীব।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ তারেকের অব্যাহতির কথা জানানো হয়। মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, নীতি ও আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলের আদর্শ ও নীতিবিরোধী কাউকে সংগঠনের পরিচয় দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। আদর্শ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ যে করবে, তাঁকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। বিরোধী কোনো পক্ষ ভুয়া আইডি খুলে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ কাজ করেছেন। সংগঠন যেহেতু অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি মেনে নিচ্ছি। তবে সংগঠনের নেতাদের কাছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছি।’

গতকাল বুধবার উপজেলা ছাত্রলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন সভাপতি মাহফুজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সামিউদ্দৌলা সীমান্ত। সামিউদ্দৌলা সীমান্ত প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় তিন নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধী সাঈদীর মৃত্যুতে তাঁরা একাধিক পোস্ট দেন। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দলে থেকে এভাবে মানবতাবিরোধীর পক্ষ নিয়ে কথা বলা সংগঠনের নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড।

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে মো. রুস্তম, মো. আফসার ও মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে কোনো অনুশোচনাও ছিল না। তাই দল তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

অভিযোগ স্বীকার করে মো. রুস্তম প্রথম আলোকে বলেন, সাঈদীর মৃত্যুর পর তিনি দুটি পোস্ট করেছিলেন। তিনি নিরাপদ নৌ যাতায়াতের জন্য কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলনে সরব ছিলেন। এ কারণে তাঁকে বহিষ্কার করা হতে পারে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের বলেন, সাঈদীর মৃত্যুর পর সাজেদুল হক ও শাহজাহান হাবীব নিজেদের ফেসবুক ওয়ালে ছবি যোগ করে পোস্ট দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে জরুরি সভা ডাকা হয়। সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে তাঁদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের।