শ্রমিক ধর্মঘটে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা বুড়িমারী স্থলবন্দর প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো মালপত্র ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি পণ্যের ট্রাক দেশে প্রবেশ করেননি। তবে এ স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি পণ্যের কিছু ট্রাক ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসছেন বলে জানিয়েছেন বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন।
আজ দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইয়ার্ডের শেড, মাঠ ও সড়কজুড়ে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। সড়কের একাধিক স্থানে শ্রমিকেরা বসে আছেন। তাঁদের ভাষ্য, শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী মজুরির টাকা সরদারদের মাধ্যমে দিলে তাঁরা তা মেনে নেবেন না। মজুরির টাকা সরাসরি লেবার হ্যান্ডেলিং ঠিকাদার বা তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থলবন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ থাকবে।
১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরির টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদের কাজের সিরিয়াল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদারপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সময় পাটগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলামসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন শ্রমিকেরা। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় প্রশাসনের উদ্যোগে শ্রমিক প্রতিনিধি, সরদার ও ঠিকাদারদের নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ১৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত ওই দিনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত হননি। শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকেরা।
স্থলবন্দরের কার্যক্রম সচল করতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানকে। কমিটি রোববার সাধারণ শ্রমিকদের ১০ জনের প্রতিনিধিদল ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামানকে নিয়ে বৈঠক করে। শ্রমিক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিক লীগ শাখার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন। ওই বৈঠক কোনো প্রকার সুরাহা ছাড়াই শেষ হয়।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। এতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হচ্ছে। আজ নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসছেন। এ সময় শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।