চার বছর পরও শুরু হয়নি সড়কের কাজ

সওজ বিভাগ সূত্র জানায়, নকশার ত্রুটি থাকায় তারা চার লেনের সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি।

জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে যানজটের এ দৃশ্য নিত্যদিনের। চার লেনের কাজ শুরু না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। গত সোমবার দুপুরে
ছবি : প্রথম আলো

জয়পুরহাট শহরের প্রধান সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজ চার বছর আগে শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি। যানবাহনের ভিড়ে প্রতিদিন এ সড়কে যানজট লেগে থাকে। সড়কের দুই পাশে অধিগ্রহণ করা জায়গায় আবার অস্থায়ী দোকানপাট গড়ে উঠছে। এতে শহরবাসী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, নকশার ত্রুটি থাকায় তারা নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি। সংশোধিত নকশা অনুমোদন পেলে তারা কাজ শুরু করবে।

গত সোমবার সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের বাটার মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে যানজট লেগে আছে। এ কারণে অনেক যাত্রী যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সড়কের দুই পাশে অস্থায়ী দোকানপাট উঠছে।

পৌর শহরের বাসিন্দারা জানান, প্রধান সড়কটি অপ্রশস্ত। কিন্তু প্রতিদিনই সড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ বাড়ছে। সড়কে যানজট তাঁদের নিত্যসঙ্গী। প্রায় দেড় বছর ধরে সড়কের দুই পাশের অধিগ্রহণ করা জায়গার স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। চার লেনের কাজ শুরু না হওয়ায় সেই জায়গাগুলো আবার দোকানপাট বসছে।

জানিয়ার বাগান এলাকার গৃহবধূ তামান্না পারভিন বলেন, শহরে প্রচুর অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করে। মেয়ে স্কুলে আনা-নেওয়া করতে প্রায় প্রতিদিনই যানজটের কবলে পড়ে হয়। প্রধান সড়কটি চার লেন হবে এমন কথা চার বছর ধরে শুনছেন। কবে হবে তার ঠিক-ঠিকানা নেই।

রিকশাচালক আলম হোসেন বলেন, ‘মোরা শুধু শোনেই আয়ছি সড়ক বাড়বে। সড়ক বাড়লে একদিক দিয়ে যাবে আরেক দিক আসবে। সড়ক বাড়ানোর কাজের কিচ্চুই হয়নি। জিংকা সড়ক সিক্কায় আছে। সড়ক বাড়ার নামে তামাশা চলছে।’

সওজ সূত্র জানায়, শহরের হারাইল কবরস্থান থেকে জয়পুরহাট রেলগেটের পূর্ব অংশ পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কথা। ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় সামনে জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-কালাই ও ক্ষেতলাল) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ ওই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের কাজের জন্য জমি অধিগ্রহণ, বৈদ্যুতিক পোল, পানির লাইন, টেলিফোন লাইন, রেলগেট প্রশস্তকরণের জন্য ১০৪ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অধিগ্রহণ করা জমি থেকে মালিকেরা তাঁদের স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। তবে বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো অপসারণ ও স্থানান্তর করা হয়নি।

জয়পুরহাট নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। এরপর তিনটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করেননি। পরে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়। এরপর নালার নকশার ত্রুটি ধরা পড়ে। সেটি সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। এখন নকশা অনুমোদন পেলে আবারও নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।

জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, চার লেন সড়কের সঙ্গে নালা ধরা ছিল। নালার নকশায় ভুল থাকা সংশোধন করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চার লেনের কাজ শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন।