বাগেরহাটে ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই, ২ কারারক্ষী আটক
বাগেরহাটে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক বিকাশ (মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান) এজেন্টের সাত লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই কারারক্ষীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছয়টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে ওই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বিকাশ এজেন্টের নাম মো. রমজান। এ সময় প্রসাদ সরদার নামের এক কারারক্ষীকে আটক করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। পরে মনিরুল ইসলাম নামের জড়িত আরও একজনকে আটক করে পুলিশ। তবে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া অপর ছিনতাইকারীর পরিচয় শনাক্ত হলেও আজ পর্যন্ত তাঁকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আটক প্রসাদ সরদার (৩২) যশোরের কেশবপুর উপজেলা ও মনিরুল ইসলাম (৩০) চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা দুজনই বাগেরহাট জেলা কারাগারের কারারক্ষী। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিকাশ এজেন্ট রমজান (২৫) বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দশানী মোড়ের দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেন। বাড়ির গেটে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ছিনতাইকারীরা ডিবির পরিচয় দিয়ে তাঁকে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে (রমজানের) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। এ সময় তাঁর কাছে থাকা টাকা ও মুঠোফোনের ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। একপর্যায়ে তিনি ডাক–চিৎকার দিলে তাঁরা মুঠোফোন ও টাকাভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে মোটরসাইকেলসহ প্রসাদ সরদারকে ধরে ফেলেন। ততক্ষণে এলাকার লোকজনও চলে আসেন। তবে ছিনতাইকারীরা ব্যাগে থাকা প্রায় সাত লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন।
বাদেকাড়াপাড়া এলাকায় শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘ডাক–চিৎকার শুনে আমরা বের হয়ে এসে রমজানের ধরে রাখা এক ছিনতাইকারীকে বেঁধে ফেলি। পরে পুলিশে খবর দিলে তাঁকে নিয়ে যায়।’
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয় ব্যক্তিদের হাতে আটক প্রসাদ সরদারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মনিরুলকে আটক করা হয়েছে। পরে দুজনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একটি সুপারিবাগান থেকে টাকা রাখার ব্যাগ ও ছয়টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। তাঁদের সঙ্গে থাকা অপর ছিনতাইকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
বাগেরহাটের জেল সুপার শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ‘মনিরুল ও প্রসাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। আটকের খবরটি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মামলা হলে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।’